আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর (নাটোর) থেকে: অনলাইনে ফ্রিল্যান্সারের কাজ করে বড় ভাইয়ের পাশাপাশি ছোট ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ চালানো ও সংসারের হাল ধরেছেন মোস্তাকিম জনি। নাটোরের গুরুদাসপুরে মধ্যবিত্ত পরিবারে তার জন্ম। বাবা মোঃ লোকমান বর্তমানে ৫ সদস্যের সংসার দেখাশুনা করেন। আর মেজো ছেলে মোস্তাকিম জনি ঘরে বসেই আয় করছেন বৈদেশিক মুদ্রা। সেইসাথে আইটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মোস্তাকিম জনি ২০১৪ সালে একটি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে মাইক্রোসফট অফিস অ্যাপ্লিকেশনের ক্লাস নিতেন। সেখানে কাজ করে যা পেতেন, তা দিয়ে নিজের খরচ চলতো। তাঁর বাবা কোকারিজ এর ব্যবসা করলেও বড় ভাই শরিফুল ইসলাম চাকরি পাওয়ার পরে সেটা ছেড়ে দেন।
মোস্তাকিম জনি কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে কাজ করার পাশাপাশি গ্রাফিক্স ডিজাইন ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টের কাজ শিখেছিলেন। তাঁর বাবার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি অনলাইনে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেন।
প্রায় ত্রিশটি দেশের ক্লায়েন্ট এর সাথে কাজ করছেন। এসব কাজের বিনিময়ে ঘরে বসেই উপার্জন করছেন বৈদেশিক মুদ্রা। এসব কাজ করে মোস্তাকিম জনি মাসে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ইউএস ডলার আয় করছেন। তাঁর অধীন স্থানীয় কয়েকজন বেকার যুবক কাজ করছেন। তাঁরাও এখন স্বাবলম্বী।
জানা যায়, জনির বাবা এলাকায় কোকারিজের ব্যবসা করলেও সেটা এখন আর নেই। তার মা মোছাঃ রুবিনা বেগম গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে মোস্তাকিম জনি মেজো। তার বড় ভাই শরিফুল ইসলাম প্রাইমারি স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ও ছোট ভাই মনিরুল ইসলাম ইন্টার প্রথমবর্ষের ছাত্র। মোস্তাকিম জনি নানুপুর ওবাইদিয়া মাদ্রাসায় উচ্চমাধ্যমিক পাস করে। পরে চট্টগ্রামের দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে ভর্তি হন।
নানুপুর ওবাইদিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আবু জাফর বলেন, ছোটবেলা থেকেই মোস্তাকিমের কম্পিউটারে কাজ করার প্রতি বেশ মনোযোগ ছিল। তাঁর স্বপ্ন ছিল আইটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পড়াশোনার পাশাপাশি ঘরে বসেই অনলাইনে কাজ করছেন তিনি। তিনি সফলও হয়েছেন।
মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র মোস্তাকিম জনি বলেন, তিনি ইউটিউবে ভিডিও দেখে দেখে ও চট্টগ্রামের কিছু বড় ভাইয়ের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে এসব কাজ শিখেছেন। তিনি আরও বলেন, যাঁরা সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে এসব কাজ শুরু করতে পারছেন না, তাঁরা ইউটিউব ও গুগলের সাহায্য নিয়ে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারেন। তবে অবশ্যই তাঁকে অধ্যবসায়ী ও পরিশ্রমী হতে হবে।
পাঠকের মন্তব্য: