খুলনায় স্ত্রী হত্যার দা‌য়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০১ নভেম্বর ২০২১, ১২:২২ এএম
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী রফিক শেখকে মৃত্যুদন্ড তদুপ‌রি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছেন আদালত। অপর এ‌কটি ধারায় তা‌কে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা জ‌রিমানার নির্দেশ দেয়া হ‌য়ে‌ছে। রবিবার খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনামুল হক রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দন্ডপ্রাপ্ত র‌ফিক রূপসা উপজেলার নেহালপুর গ্রামের মৃত আবেদ শেখের ছেলে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিকভাবে আসামি রফিক শেখের সাথে ফকিরহাট উপজেলার হালিমা বেগমের ছোট মেয়ে মরিয়মের বিয়ে হয় ২০১৭ সালে। বিয়ের পর তারা বেশ সুখে ছিল। মরিয়ম একটু বেশী মোবাইলে কথা বলতো পরিবারের সদস্যদের সাথে। এটি তার জীবনে কাল হয়ে দাড়ায়। মোবাইলে কথা বলাকে সন্দেহ করত নিহতের স্বামী। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ বিবাদ লেগেই থাকতো। এক পর্যায়ে তারা উভয় নেহালপুর থেকে ফকিরহাট উপজেলার খাজুরা এলাকায় রকি শেখের ভাড়া বাড়িতে এসে ওঠে। সেখানে এসেও তার ওপর একই অভিযোগে নির্মম অত্যাচার করা হয়। আসামি রফিক শেখ কবুতর পালন ও মোটরসাইকেল চালিয়ে সংসার চালা‌তো। ২০২০ সালের ১২ আগস্ট দুপুর ১২ টায় বাড়ি এসে রফিক তার স্ত্রীকে না পেয়ে সন্দেহের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। বাইরে থাকার কারণ জানতে চায় সে। উত্তর দিতে না পারায় স্ত্রীকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন সকালে রফিক রূপসা উপজেলার দেবীপুর গ্রামের দীপক দাসের পানের বরজের মধ্যে পেট্রোল ও একটি বস্তার মধ্যে কয়েকটি ইট রেখে আসে। রাতে বেড়ানোর কথা বলে দু’জন রূপসা ব্রীজসহ বিভিন্ন জায়াগায় ঘুরতে থাকে। রাত ১০ টায় উভয় ঘটনাস্থলে পৌছালে রফিক পানের বরজের সামনে এনে ছলনার আশ্রায় নিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই ভিকটিমকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করতে থাকে একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ভিকটিমের শরীরে বস্তা পেচিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আসামি রফিক শেখ বাড়ি ফিরে গিয়ে মরিয়মের মাকে প্রতিবেশী রঞ্জন বৈরাগীর মাধ্যমে জানায়, মরিয়মকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। মরিয়মের মা সম্ভাব্য আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজ নিতে থাকে। এর দু’দিন পর তার অর্ধগলিত ও পোড়া লাশ পাওয়া যায় রূপসা উপজেলার দেবীপুর গ্রামে দীপকের পানের বরজের মধ্যে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে সুরাতহাল রির্পোট তৈরি করে মর্গে প্রেরণ করে। হালিমা বেগম লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে গিয়ে তার মেয়েকে সনাক্ত করে। এ ব্যাপরে নিহতের মা রূপসা থানায় বাদী হয়ে রফিক শেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও চার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো: শাহাবুদ্দিন গাজী রফিক শেখকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: