আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর (নাটোর) থেকে: নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের লহ্মীপুর গ্রামের হাজি সায়েদ আলী মোল্লার ছেলে আবুল কাশেমকে (৪৫) প্রকাশ্যে উপর্যপুরি ছুড়িকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নাজিরপুর ডিগ্রী কলেজ গেটের সামনে গোপিনাথপুর গ্রামের মৃত রজব আলীর ছেলে কেনাল (৪৪) তাকে হত্যা করে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন কেনাল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাশেম ও কেনাল পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দা ও ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলেন। নিহত আবুল কাশেম পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। তার পরিবারে স্ত্রী, ১৩ বছর বয়সি এক ছেলে ও ২ বছর বয়সি এক মেয়ে রয়েছে। প্রায় ৫ বছর আগে ইরাক থেকে দেশে ফিরেন কাশেম। বিদেশ যাওয়ার জন্য বন্ধু কাশেমের দারস্ত হন কেনাল।
তিনবছর আগে বিদেশ যাওয়ার জন্য কাশেমের সাথে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার আর্থিক লেনদেন করেন কেনাল। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও বিভিন্ন অজুহাতে কেনালকে বিদেশ পাঠাননি। এনিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। কেনালের টাকা নিয়ে ১ বছর আগে সালিশি বৈঠক হয়। সে সময় নিহত আবুল কাশেম ১ লাখ টাকা কেনালকে ফেরত দেন। বাকি ৮০ হাজার টাকার জন্য কাশেমের কাছ থেকে ফাঁকা চেক নেন কেনাল। কাশেম বাকি টাকা পরিশোধ করতে চাইলেও ফাঁকা চেকটি ফেরত দিতে তালবাহানা শুরু করেন কেনাল। এরপর থেকেই দুজনের মধ্যে রেষারেষি চলে আসছিল।
নিহত কাশেমের মা জামেনা বেগম বিলাপ করতে করতে জানান, কেনাল বুধবার সকালে চেক ফেরত দেওয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে কাশেমকে ডাকেন। কেনালের ফোন পেয়ে গরম ভাত রেখে বাইসাইকেল নিয়ে নাজিরপুর বাজারে যান তার ছেলে কাসেম। এরপর ছেলে বাড়িতে ফেরত আসেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী মুদিদোকানি বেলাল হোসেন জানান, বুধবার সকালে তার দোকানের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন অভিযুক্ত কেনাল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাইকেল নিয়ে বাজার থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন আবুল কাশেম। কাশেম তার দোকানের সামনে এলে কেনাল পথরোধ করে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। কাশেম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পিঠে এবং পেটে এলোপাথারিভাবে ছুড়িকাঘাত করে পালিয়ে যান কেনাল। পরে কাশেমকে উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কাশেমকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিন জানান, তিনি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। আসামি কেনাল পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এই হত্যাকা-ের ব্যপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পাঠকের মন্তব্য: