কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কৃষি কাজে ব্যবহৃত হাতছান্নি

প্রকাশিত: ১০ নভেম্বর ২০২১, ০৭:৫৯ পিএম
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে কৃষি কাজে ব্যবহৃত হাতছান্নি এখন বিলুপ্তীর পথে। প্রাচীনকাল থেকে হাতছান্নি কৃষিকাজে ব্যবহারে চাষিদের জীবন-জীবীকার অন্যতম উৎস। এই কৃষি কাজে ব্যবহৃত হাতছেন্নি ছাড়া কোন প্রকার জমিতে কৃষকরা ফসল ফলাতে পারেনি। কৃষিকাজে হাতছান্নির মাধ্যমে কৃষিতে সোনার ফসল ফলায় প্রান্তিক চাষিরা। হাতছান্নি আজ থেকে দুই যুগ আগে সবার পরিচিত ছিল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাতছান্নি এখন বিলুপ্তির পথে। বিশেষ করে গ্রামগঞ্জে প্রান্তিক কৃষকদের পাশাপাশি শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষের কাছে কৃষি কাজে ব্যবহৃত হাতছান্নি নামের যন্ত্রটি সবার সুপরিচিত। সাধারণত যেটি আকারে বড় সেটি বেদা, আর যেটি আকারে ছোট সেটি হাতছান্নি। থেকে প্রায় দুই যুগ আগে হাতছান্নি নামের যন্ত্রটির ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। প্রান্তিক চাষিরা হাতছান্নির ব্যবহার কমেই এখন আর আগের মতো দেখা মেলে না। ফলে কালের বিবর্তনে এখন এই যন্ত্রটি বিলুপ্তির পথে। কয়েক দিন আগে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম এলাকায় ধরলা নদী ও নীল কমল নদের তীরবর্তী গ্রামে কৃষক কমলা কান্ত রায় জমিতে আগাছা পরিস্কার করতে হাতছান্নি ঘাড়ে করে মাঠে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। বড়ভিটা ইউনিয়নের ধনিরাম এলাকার কৃষক কমলা কান্ত রায় জানান, এই হাতছান্নি দিয়ে নিড়ানির কাজে ব্যবহার করি। তিনি আরও জানান জমিতে ফলল ফলার সময় জমিতে ঘাঁস ও আগাছাসহ বিভিন্ন ধরণের জাঁকন পরিস্কার করতে হাতছান্নির ব্যবহার অপরিসীম। বাপ-দাদার আমন থেকে আমরা হাতছান্নি ব্যবহার করে আসছি। তবে আগের চেয়ে এর ব্যবহার অনেকাংশে কমেছে। আগে প্রতিটি পরিবারে হাতছান্নির ব্যবহার করতো। নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কুরুষাফেরুষা গ্রামের কৃষক মনছার আলী ও শৈলান চন্দ্র রায়ের কাছে, হাতছান্নির বিষয়টি জানতে চাইলে তারা জানান, আগে অধিকাংশ কৃষক পরিবারের বাড়ীতে এ হাতছান্নি ছিল। এই হাতছান্নি দিয়ে ২০ থেকে ২৫ বছর আগে আমরাই ব্যবহার করতাম। এখনো করছি। তবে আগের তুলনায় কম। এই হাতছান্নি দিয়ে আমরা খেতের বিতরি ধান,সরিষা,কাউন ও পাট খেতে হাতছান্নি ব্যবহার করতো। নিড়ানির কাজে খেতে বেদা দেওয়া হতো। হাতছান্নি ও বেদা দেওয়ার কারণে কৃষি শ্রমিক কম লাগতো। এখন তেমন প্রচলন না থাকায় বিশেষ করে ১০ থেকে ২০ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েরা হাতছান্নি কি জানেন না। কিন্তু এখনো কিছু কিছু চরঞ্চলে কাউন চাষ করলে হাতছান্নির ব্যবহার করছে। ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা.নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, একটি বাঁশের দন্ড দিয়ে এই যন্ত্রটি দ্বারা কাজ করা হয়। চাষিরা এই হাতছান্নি নামের কৃষি কাজের এ যন্ত্রটি অতিরিক্ত অবাঞ্চিত গাছ ও আগাছা নিধন করে। কৃষি কাজের জন্য এর গুরুত্ব অনেক বেশি। আগে এর ব্যবহার অনেক বেশি ছিল। এখন আস্তে আস্তে হাতছান্নির কমে যাচ্ছে। তারপরেও কিছু চাষি বাপ-দাদার আমলথেকে হাতছান্নি ব্যবহার করে আসছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: