পুলিশ রবিন আমার এতবড় সর্বনাশ করবে আমি আগে ভাবিনি!

প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৩২ পিএম

পুলিশ কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম রবিনের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন গৌরীপুর উপজেলার এক কলেজ ছাত্রী। মোঃ শহিদুল ইসলাম রবিন গৌরীপুর উপজেলার পশ্চিম দাপুনিয়ার পুলিশ কনস্টেবল সুরুজ মিয়ার পুত্র।

তিনি বর্তমানে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ লাইনে কর্মরত। অভিযোগে জানা যায়, পুলিশ কনস্টেবল রবিন নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর উপজেলায় ভুয়া ঠিকানায় ভর্তি হন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, ২০১৬ সালে শহীদুল ইসলাম রবিনের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয়। এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে কথা হয়। এরপর সশরীরে দেখা সাক্ষাত হয়। বিভিন্ন পার্কে তাকে নিয়ে ঘোরাফেরা অন্তরঙ্গ মুহূর্তে জড়িয়ে ধরে মোবাইল ক্যামেরায় সেলফিও উঠায় মোঃ শহিদুল ইলাম রবিন।

গত ২০২০ সালের ০৩ সেপ্টেম্বর কনস্টেবল মোঃ শহিদুল ইলাম রবিন কলেজ ছাত্রীকে ময়মনসিংহ শহরের গাঙ্গিনারপাড় ডেকে নিয়ে আসে। বিয়ে করার জন্য নানাভাবে প্রস্তাব ও প্রলোভন দেন। শহরের হারুন টাওয়ারের নীচে একটি আবাসিক হোটেলের রুমে নিয়ে যায়। কলেজ ছাত্রীর স্বামী পরিচয় দিয়ে রুম ভাড়া নেয় । চার ঘন্টা রুমে অবস্থানকালে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর আবারও বিয়ের কথা বলে হেরা আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায়। সেখানে রবিন তার নিজের নাম হোটেল রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধও করে। সেখানেও তাকে ধর্ষণ করা হয়। বিয়ের কথা বললে মোঃ শহিদুল ইলাম রবিন অস্বীকৃতি জানায়।

উপরন্তু শহীদুল ইসলাম রবিন তার বাবা ও দুই ভাই পুলিশে চাকুরী করে বলে ভয় দেখায়।বাধ্য হয়েই ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপারের কাজে প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভাগীয় মামলা রজু করেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। বিভাগীয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মো: রায়হানুল ইসলাম। বিভাগীয় মামলার তদন্তের কোন ফলাফল পাইনি বাদী লাকী আক্তার। পরে ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে কনস্টেবল মোঃ শহিদুল ইলাম রবিনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ পত্র নং - ১৩৯/২১।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মামলাটি সংস্থাটির এসআই রফিককে তদন্তের দায়িত্ব দেন। এসআই রফিক তদন্তের অংশ হিসাবে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠায় ।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান, ধর্ষণের আলামত পাওয়া যাওয়ায় রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। আমি রিপোর্ট দিয়েছি। মামলার বাদী লাকী বিডি২৪লাইভকে জানান, আমি সরল বিশ্বাসে শহীদুল ইসলাম রবিনকে ভালবেসে তার কথায় তার সাথে আবাসিক হোটেলে যাই। রবিন পুলিশ যে আমার এতবড় সর্বনাশ করবে আমি আগে ভাবিনি। আমার জীবনটাই শেষ করে দিয়েছে। তাকে স্বামী হিসাবে স্বীকৃতি চাই। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার দায়েরকৃত মামলা তুলে নিতে এখন আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। ছাত্রীর মা আয়েশা খাতুন জানান, মেয়ে হিসাবে ভাল এবং ছাত্রী হিসাবে খুবই মেধাবী। সহজ সরল। রবিন শুধু আমার মেয়ের সর্বনাশ করেনি। আমাদের পরিবারকেও কালিমাপাত করেছে। তারা আমাকে হুমকি দিচ্ছে । মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই রফিকের কাছে গেলে মামলা সংক্রান্ত কোন সহযোগীতা পাইনা। আমাদের সাথে দেখাও করে না।

ময়মনসিংহ পিবিআইয়ের এসআই রফিক জানান, মামলা তদন্তাধীন আছে। এবিষয়ে কিছু বলা যাবে না। অভিযুক্ত কনস্টেবল মোঃ শহিদুল ইলাম রবিন জানান,মামলাটির সম্পন্ন সাজানো, মিথ্যা ভিত্তিহীন, আমাকে ফাঁসানোর জন্য এমন কাহিনী করেছেন। সে আমার ক্লাসমেট, আমার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। আমিতো পুলিশের চাকরি করি, তাকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আদালতে আমি ন্যায়বিচার পাবো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: