পিআইসি ও ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম

প্রকাশিত: ১৭ জানুয়ারি ২০২২, ০১:৫৪ পিএম

জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া, সুনামঞ্জ থেকে: সুনামগঞ্জে ১২টি উপজেলায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গঠন করা হয়নি পিআইসি আর শুরুও হয়নি ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ। সঠিক সময়ে কাজ শুরু না হওয়ায় বাঁধ ভেঙ্গে বোরো ফসলের ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধের কাজে ঢিলেমি লক্ষ্য করা গেছে। তাই এক ফসলী বোরো ফসলী জমির ওপর নির্ভরশীল কৃষকদের মাঝে চাপা ক্ষোব বিরাজ করছে।

জানা যায়, বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত কাজ শুরু হওয়ার কথা গেল বছরের ১৫ ডিসেম্বর। এবং ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সকল পিআইসি কমিটি চুড়ান্ত হওয়ার কথা। ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারী বাঁধের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে তার উল্টো। শুধু মাত্র কয়েকটি বাঁধে উদ্বোধন করেই শুরু হয়েছে এমনটা জানান দিচ্ছেন পাউবো।

এদিকে বাঁধের কাজে টিলেমিতে সন্তুষ্ট নন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা। তারা বলছেন, নির্বাচনের দোহাই দিয়ে কাজ পিছিয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছেন পাউবো। কিন্তু এ যুক্তি আদতে সঠিক নয়। পাউবো বরাবরই নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করে না।

সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের নির্ধারিত সময়সীমা ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। জেলার ১১টি উপজেলায় এবার ৫২০ কিলোমিটারে ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামত ও নির্মাণ হবে। এ পর্যন্ত ৭০১টি প্রকল্প নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্পে প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে পিআইসি গঠন করা হয়েছে ৬৬৮টি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কাজ শুরু হয়েছে ১৮৩টি প্রকল্পে। বাকি ৫১৮টি প্রকল্পে এখনো কাজ শুরু হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের বাকি আছে এখনো ৩৩টি প্রকল্পের।

পাউবোর হিসাব অনুযায়ী, জেলার ছাতক উপজেলায় ১১টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এখনো একটিতেও কাজ শুরু হয়নি। সবচেয়ে বেশি প্রকল্প ধর্মপাশা উপজেলায় ১৫৭টি, এর মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে ৪০টিতে। তাহিরপুর উপজেলায় ৬২টির মধ্যে ৪টি,জামালগঞ্জে ৩৬টির মধ্যে ১৬টি,শাল্লা উপজেলায় ১৩৮টির মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে মাত্র ১০টিতে। দিরাই উপজেলায় ৯০টি প্রকল্পের মধ্যে ১৫টি, সদর উপজেলায় ২৫টির মধ্যে ২১টি, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ৩৩টির মধ্যে ১৩টি, শান্তিগঞ্জে ৫৫টির মধ্যে ৩৮টি, জগন্নাথপুরে ২৮টির মধ্যে ১১টি এবং দোয়ারাবাজার উপজেলায় ৪১টির মধ্যে ১৫টি প্রকল্পে কাজ চলমান।

পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ও হাওরে বাঁধ নির্মাণ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সদস্যসচিব মোঃ জহুরুল ইসলাম জানান, অনেক প্রকল্পে কাজ চলমান। এক সপ্তাহের মধ্যে সব প্রকল্পে কাজ শুরু হবে। ফসল রক্ষা বাঁধে মাটির কাজটিই মূল। এটি আমরা নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারব বলে আশাবাদী।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: