রাজীবপুর উপজেলা ছাত্রদল কমিটি থেকে পদত্যাগের হিড়িক

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:৫০ পিএম

কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলায় ইয়াবাসহ আটক এক নেতাসহ অছাত্র, অনুপ্রবেশকারী ও সুযোগসন্ধানীদের নিয়ে ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে অনাস্থা প্রকাশ করে ঘোষিত কমিটি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। গত ২০ জানুয়ারি উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মোখলেছুর রহমান ও সদস্য সচিব মো: নাজমুল হাসান স্বাক্ষরিত সদর, মোহনগঞ্জ ও কোদালকাটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়।

রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের ঘোষিত কমিটিতে সভাপতির পদ পাওয়া আবু হান্নান মাদক মামলার আসামি বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানার চৌরাস্তার মোড়ে একটি রেস্টুরেন্ট থেকে প্রায় ১৮ শ’ পিচ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তিনি জেলও খাটেন। মামলাটি এখনও বিচারাধীন বলে জানা গেছে।

ঘোষিত কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের অন্তত ১১ জন নেতা। এঁদের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান কিরণ।

তিনি জানান, এ কমিটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া ফজলুল করিম যুবদল নেতা আব্দুল জলিলের ভাতিজা। সাংগঠনিক যোগ্যতা না থাকলেও স্বজনপ্রীতি করে তাকে সম্পাদকীয় পদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেকের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের বি টিম হিসেবে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি আবু হান্নানের সাথে শনিবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধায় যোগাযোগ করলে তিনি নিজের বিরুদ্ধে মামক মামলা থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘নিজ দলের গ্রুপিংয়ে পড়ে আমাকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

প্রতিপক্ষের দুই নেতা পরিকল্পিতভাবে আমাকে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়েছে। এই মামলায় যারা সাক্ষী তারা ঘটনার প্রকৃত তথ্য আদালতে উপস্থাপন করবেন। আমি নির্দোষ তা আদালতেই প্রমাণ হবে।’ ঘোষিত কমিটি যোগ্য নেতৃবৃন্দ নিয়েই হয়েছে বলে দাবি করেন এই ছাত্রদল নেতা।

কমিটি ঘোষণার পর কমিটির অনেকের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবু হান্নান আরও জানান, পদত্যাগ পত্রে যাদের নাম এসেছে তারা কেউ নিজে স্বাক্ষর করেননি।

মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটি থেকে পদত্যাগকারী সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল আলম জুয়েল বলেন, ‘কমিটিতে অছাত্র, অযোগ্য লোকদের স্থান দেওয়া হয়েছে যাদের অনেকের স্বাক্ষর করার যোগ্যতাও নেই। এরা ছাত্রদলের নেতা হওয়ার যোগ্য কিনা সে প্রশ্নও রয়েছে।

কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর এসব অযোগ্য লোকদের দেখে আমিসহ অনেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি। আমরা চাই এই কমিটি পুনর্মূল্যায়ন করা হোক।’এই কমিটি ঘোষণায় দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ করেন এই পদত্যাগী নেতা।

এ বিষয়ে জানতে রাজীপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মোখলেছুর রহমানকে শনিবার সন্ধায় ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। আর সদস্য সচিব নাজমুল হাসানের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

এব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাসান জোবায়ের হিমেল বলেন, ‘আমরা বিষয়গুলো শুনেছি। আবু হান্নানের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা থাকলেও তাঁকে মূলত ফাঁসানো হয়েছে। সে ব্যাপারে আমাদের কাছে স্বাক্ষ্য প্রমাণও আছে। যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। মূলত পদ বঞ্চিতরাই এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: