জাল জাতীয় পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে দিত তারা

প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২২, ১২:১২ এএম

ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), ড্রাইভিং লাইসেন্স ও শিক্ষা সনদ তৈরী চক্রের মূল হোতা গোলাম মোস্তফাসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। সোমবার (২১ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগ, বাসাবো, শাহজাহনপুর ও কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে  তাদেরকে  গ্রেফতার করা হয় । প্রতিদিন বিআরটিএ এবং নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে এরা টার্গেটে থাকত। তারা মূলত সাধারণ মানুষদের জাল জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে দিত। তবে তাদের প্রধান টার্গেট বাইক রাইডাররা। এছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষ, সন্ত্রাসী, জঙ্গি, রোহিঙ্গারাও এই চক্রের কাছ থেকে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করত বলে র‍্যাব প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে। এ সময় তাদের কাছে থেকে বিপুল পরিমাণ ভুয়া এনআইডি কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং জাল নথিপত্র তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেফতার করা এই চক্রের সদস্যরা হলেন- গোলাম মোস্তফা (৬০), জালাল বাশার (৫৪), মুসলিম উদ্দিন (৬৫), মিনারুল ইসলাম মিন্নি (২২) এবং তারেক মৃধা (২১)। তাদের গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার কারওয়ানবাজারে এক সংবাদ সম্মেলন করেন র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। সেখানে এই চক্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তারা এমনভাবে এসব কার্ড তৈরি করত, প্রাথমিকভাবে ধরার কোনো সুযোগ থাকত না।’

তিনি  আরো জানান, সোমবার (২১ মার্চ) রাতে রাজধানীর মালিবাগ, বাসাবো, শাহজাহানপুর ও কোতয়ালি থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোলাম মোস্তফা, জালাল বাশার, মুসলিম উদ্দিন, মিনারুল ইসলাম (মিন্নি) এবং তারেক মৃধাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় দুটি কম্পিউটার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের ২ হাজার ৪৬০টি জাল রশিদ, ২৬টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, ১টি ল্যাপটপ, ১টি ডিজিটাল ক্যামেরা, ১৮টি ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, ৮০টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরীর ব্লাঙ্ক কার্ড, ৫০টি স্বচ্ছ কার্ড হোল্ডার জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা ৮-১০ বছর ধরে ভুয়া এনআইডি কার্ড, ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডের জাল সার্টিফিকেট ও অন্যান্য জাল নথিপত্র তৈরি করে আসছে। মোস্তফা এ চক্রের মূল হোতা। বাকিরা তার সহযোগী। চক্রের সদস্যরা নির্বাচন অফিস ও বিআরটিএ অফিসের সামনে অবস্থান নিয়ে গ্রাহকদের টার্গেট করত। তাদের দ্রুততম সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে চটকদার বিজ্ঞাপনও দিতো তারা। প্রতিটি ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩-৪ হাজার টাকা দাবি করত। দ্রুত এনআইডি/ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার জন্য ক্ষেত্র বিশেষে তারা ৮-১০ হাজার টাকা নিতো তারা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: