পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান জমেছে ময়মনসিংহে

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২২, ১০:৫৫ পিএম

নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে প্রমত্তা নদীর বুকে নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু মহাধুমধামে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আনন্দ শুধু মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও মাদারীপুরের জাজিরা প্রান্তেই নয়। এই আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে দেশব্যাপী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা স'শরীরে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে যেতে পারেনি, তারা দিনভর টেলিভিশনের সামনে বসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে হইহুল্লোরে মেতেছেন।

শনিবার (২৫ জুন) সকাল থেকে এমন চিত্র দেখা যায়, ময়মনসিংহ জেলা শহর থেকে গ্রাম এলাকা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে আনন্দ। কোনখানেই নেই যেন আনন্দের কমতি। সকলেই মেতেছেন আনন্দে। জেলার গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর বাজার এলাকার বাজারের চা'য়ের দোকানে টেলিভিশনে পদ্মা সেতু দেখার পাশাপাশি জমে উঠেছে আলোচনা সমালোচনা। তারাও দাবি করছেন নৌকাই আমাদের ভরসা। ওই দোকানে চা পান করতে আসা আতিকুর রহমান নয়ন বিডি২৪লাইভকে বলেন আমার টাকায় পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু শুধু সেতু নয়, এটি দেশের দক্ষিনাঞ্চলের ভাগ্যের উন্নয়নের সোপান। এ সেতু দেশের মানুষকে এক করেছে, এসেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের সক্ষমতা বিদেশের কাছে প্রমাণিত হয়েছে।

রামগোপালপুর বাস স্টেশনের চায়ের দোকান্দার মো. নজরুল ইসলাম বিডি২৪লাইভ বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন। এজন্য আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। দোয়া করি বঙ্গবন্ধুর কন্যা যেন দীর্ঘদিন বেচে থাকে এবং দেশের উন্নয়ন করে। বঙ্গবন্ধু এনেছে বাংলার স্বাধীনতা আর তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এনেছে বাংলার জাতীয় সম্পদ পদ্মা সেতু। এজন্য আমরা গর্বিত আনন্দিত। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ৩১ নাম্বার ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকার মনোহারি চা'র স্টলে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত বেসরকারী টেলিভিশনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে আনন্দ করছেন। একই সাথে প্রধানমমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট ও দক্ষ নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন। তাদের ধারণা বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার ছাড়া পদ্মা সেতু অন্য কোন সরকারের সময় করা সম্ভব হতো।

টেলিভিশন দেখতে বসা জাহাঙ্গীর আলম নামে এক যুবক বিডি২৪লাইভকে বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরুতে যে ষড়যন্ত্র দেশি বিদেশিরা যে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল। তাতে মনে হয়েছিল মাঝপথেই হয়তোবা কাজ বন্ধ করতে হবে। তবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট ও দক্ষ নেতৃত্বের কারণেই পদ্মা সেতু সম্পন্য হয়েছে। তবে, এই সেতু প্রমাণ করে, আমরা চাইলেই অনেক কিছু করতে করতে পারি।মেয়াজউদ্দিন নামে আরও একজন বলেন, আমি যুদ্ধ দেখেনি। তবে, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তার মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সবচাইতে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতু পেয়েছি। যদিও পদ্মা সেতু আমাদের প্রয়োজন আসবে না। কিন্তু বেশ কয়েকটি জেলার সাথে ঢাকার সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা হয়েছে। এতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে বলে আমি মনে করি।

এদিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে ময়মনসিংহে বিভিন্ন আয়োজন করেছেন। এর মধ্যে ময়মনসিংহে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক উদ্দিন ভুইয়া স্টেডিয়ামে প্রামান্যচিত্রের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন সরাসরি উপভোগ করেন প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

এছাড়াও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে এদিন সকালে স্থানীয় টাউনহল প্রাঙ্গন থেকে একটি বিশাল বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভাষা সৈনিক রফিক উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশ পারে সেই প্রমাণ বহন করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন, বাঙ্গালী বীরের জাতি, সাহসী জাতি। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। প্রধানমন্ত্রীর সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পুরণে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।

এসময় রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ শাহ আবিদ হোসেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আনোয়ার হোসেন, প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহমার উজ্জামান, রেঞ্জ অফিসের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ, জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সিআইডির এসপি মোঃ আনিছুর রহমান, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস, টুরিস্ট পুলিশের এসপি মোহাম্মদ নাইমুল হাছান, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইউসুফ আলী, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন মন্তা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিকাশ রায় প্রমুখ।

এর আগে শুক্রবার বিকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আতশবাজির মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করা হয়। পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহ নগরীর প্রতিটি সরকারি বেসরকারি ভবনে আলোকসজ্জা, প্রতিটি রাস্তায় ব্যানার- ফেস্টুন টাঙ্গানো হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: