ট্রাক চাপায় পরিবার হারানো সেই নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন প্রসূতি মায়েরা

প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০২২, ০৪:২৩ পিএম

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাক চাপায় মা বাবা বোন হারানো নবজাতককে পালাবদল করে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন ওই হাসপাতালে সন্তান প্রসব করা অন্যান্য প্রসূতি মায়েরা। ওই শিশু মহানগরীর চর পাড়া লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

রবিবার (১৭ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে লাবি লাবিব হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান মিয়া বিডি২৪লাইভকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ট্রাক চাপায় মা বাবা বোন হারানো নবজাতক আমার হাসপাতালে ভর্তি আছে। ওই শিশুর প্রয়োজনে হাসপাতালের অন্যান্য প্রসূতি মায়েরা বুকের দুধ পান করাচ্ছেন। এতে বাচ্চাটির বুকের দুধের চাহিদা পুরণ হচ্ছে। আশা করছি, বাচ্চাটি ১৫ থেকে ২০ দিনের মাঝে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ।

একই হাসপাতালে পাঁচ দিন আগে কন্যা সন্তান প্রসব করেন সদর উপজেলার দাপুনিয়ার কানাপাড়ার আলমাসের স্ত্রী নাছিমা বেগম। তিনি বিডি২৪লাইভ কে বলেন, শুনেছি ওই শিশু জন্মের সময় সড়ক দুুর্ঘটনায় মা বাবা বোন মারা গেছে। আমি একজন মা হিসাবে আমার বুকের দুধ দিয়েছি।

লাবিব হাসপাতালের সেবিকা (নার্স) সুরাইয়া ইয়াসমিন বিডি২৪লাইভকে বলেন, শনিবার রাতে এক প্রসুতি তার বুকের দুধ দিয়েছিল। আজ উনার ছুটি হয়ে গেছে। পরে নাছিমা বেগম নামে আরেক প্রসুতি তিনবার দুধ দিয়েছেন। আজ তারও ছুটি হয়ে যাবে। তবে, হাসপাতালে আরও প্রসুতি আছে। তারা সেচ্ছায় ওই শিশুকে বুকের দুধ দিবেন বলেও জানান তিনি।

এর আগে শনিবার (১৬ জুন) দুপুরের পরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের ফকির বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার অস্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না বেগম (৩০), মেয়ে সানজিদাকে (৬) নিয়ে আল্টাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। পৌর শহরের খান ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রত্না বেগম মারা যায় এবং মেয়ে সানজিদা আক্তার গুরুতর আহত হয়। এ সময় ট্রাক চাপায় রত্না বেগমের পেট ফেটে কন্যা শিশুর জন্ম হয়।

পরে আহত সানজিদা ও নবজাতককে নিয়ে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সানজিদাকে মৃত ঘোষণা করে নবজাতক বাচ্চাটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। তবে, অতিরিক্ত যানজটের কারণে নবজাতককে চুরখাই কমিনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে সেখান থেকে চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মহনগরীর চরপাড়া এলাকায় লাবিব হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: