কার ভুলে ভাঙলো সেতুটি, সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ
মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে ভেঙে পড়েছে সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বাঁকড়া সেতুটি। চলতি মাসের ৫ তারিখে সেতুটি ভেঙে পড়লেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কেউ। ফলে ভেগান্তিতে পড়ছেন পাশ্ববর্তী ৪০টি গ্রামের তিন লক্ষ মানুষ। তাছাড়া সেতুর এপার-ওপারে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্টান রয়েছে সেখানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তির মধ্যে। এদিকে অনেকটা সময় পার হয়ে গেলেও সেতুটি সংস্কার বা নতুন করে তৈরীর উদ্যোগ নেয়নি কেউ। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা।
আশাশুনি প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তথ্য মতে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মরিচ্চাপ নদীর ওপর বাকড়া এলাকায় ৬০ ফুট দৈর্ঘের সেতুটি ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মান করা হয়।
এদিকে, সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ না নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একে অন্যের দোষ ত্রুটি ও দোষারোপ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। এমন বক্তব্যে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তাহলে কার ভুলে ভাঙল সেতুটি এই প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাচ্ছেনা ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান জানান, চলতি মাসের ৫ তারিখ ভোরে সেতুটি ভেঙ্গে পড়ে। তবে এতটা সময় পার হলেও সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি কেউ। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে পার্শ্ববর্তী ৪০ টি গ্রামের প্রায় চার লাখ বাসিন্দা। তাছাড়া পার্শ্ববর্তী কয়েকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছেন। কিছুদিন আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে নদীর খনন করা হয়। এ সময় সেতুটির দুই পাশ থেকে গভীর করে মাটি কাটা হয়। তার ফলশ্রুতিতে কয়েক দিনের মধ্যেই সেতুটি মাঝ বরাবর ভেঙ্গে দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। তবে এতটা সময় পার হলেও সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কেউ, বরং পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মধ্যে চলছে রেষারেষি।
খলিল নামের অপর একজন জানান, যেকোনো মুহূর্তে একটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। কারণ বাধ্য হয়ে অনেক ভারি যানবহন পারাপার হচ্ছে সেতু দিয়ে। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সকলকে জানানো হলেও তারা কোন সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না।
এ সকল বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ খান বলেন, সেতুটি চারপাশ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার গভীরভাবে মাটি কেটে নিয়েছেন যার ফলে সেতুর মূল অবকাঠামো সরে গেছেন মূলত সে কারণেই এটি ভেঙ্গে পড়েছে।
সংস্কারের বিষয়ে তিনি জানান, সেতুটি যখন নির্মাণ করা হয়েছিল তখন দুই পাশে পাকা রাস্তা ছিল না। সেতু নির্মাণের পরে দুইপাশে পিচের রাস্তা হয়েছে। ফলে এখন বিষয়টি এলজিইডির আওতায় চলে গেছে। আমাদের আওতায় সর্বোচ্চ ৫০ ফিটের সেতুর বাজেট রয়েছে তবে এখানকার খালটি বর্তমানে ২০০ ফিটের মত রয়েছে। বিধায় কাজটি এলজিইডি করবে।
এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা এলজিইডি'র প্রকৌশলী আক্তার হোসেন জানান, সেতুটি আমাদের আওতায় ছিল না তবে ভেঙ্গে পড়াই এটি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় কোন একটি প্রজেক্টের আওতায় নিয়ে কাজটি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মোটামুটিভাবে দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি কাজ করার পরিবেশ তৈরী হবে।
অন্যদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, নদী খননের জন্য নয়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছাড়াই সেতুটি নির্মাণ করার কারণে সেতুটি ভেঙে পড়েছে। সেতুর ফাউন্ডেশন কম থাকায় এটি ভেঙে পড়েছে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: