পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশুটিকে পাঠানো হলো নতুন ঠিকানায়

প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২২, ০৩:৫১ পিএম

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাক চাপায় মায়ের পেট ফেটে সড়কে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতককে আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গাড়িযোগে ঢাকা আজিমপুর শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সকাল ১০ টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী ওই শিশুকে জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ ওয়ালীউল্লাহ ও নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুর কাছে হস্তান্তর করেন।

পরে ত্রিশাল সমাজ সেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, জেলা সরকারী শিশু পরিবার (বালিকা) খালাম্মা তাহমিনা আক্তার স্বপ্না, দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু এবং পুলিশ অফিসারসহ দুইজন পুলিশ সদস্য নবজাতক নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি, হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (শিশু ও নবজাতক) ডাঃ নজরুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ ওয়ালীউল্লাহ ও নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুসহ হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃওয়ালীউল্লাহ বলেন, সুবিধা বঞ্চিত শিশু হিসাবে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নবজাতককে ঢাকা আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে পাঠানো হয়েছে। তবে, আমরা কারোর তত্বাবধানে নয়, সম্পুর্ণ সরকারী তত্বাবধানে নবজাতকে দেখাশোনা করা হবে। নবজাতক শিশুটির দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বলেন, আমার সম্মতিতে প্রশাসন আমার নাতি ফাতেমাকে আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে পাঠিয়েছেন। নাতিকে দেখার ইচ্ছা হলে আমি যে কোন সময় তাকে দেখতে যেতে পারব। প্রশাসন থেকে আমাকে আশ্বস্থ করা হয়েছে, যে আমাদের থাকার জন্য দুই রুম বিশিষ্ট একটি হাফ বিল্ডিং এবং অপর দুই শিশু জান্নাত ও এবাদতের লেখাপড়াসহ সার্বিক সহায়তা করবেন।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (শিশু ও নবজাতক) ডাঃ নজরুল ইসলাম বলেন, মেডিকেল বোর্ড গঠন করে আমরা ১২ দিন ওই নবজাতককে চিকিৎসা দিয়েছি। জন্ডিস ও শ্বাসকষ্ট পুরোপুরি ভাল হলেও ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ভাল হতে দুই সপ্তাহের মত সময় লাগতে পারে। ১২ দিন নবজাতকের চিকিৎসা দেয়ায় তার প্রতি যে ভালবাসা কাজ করছে। তার চলে যাওয়া আমাদের কাছে কষ্টের। তবে, সে ভাল থাকুক, এটাই আমাদের কাম্য।

গত ১৬ জুন দুপুরের পরে উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার অস্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না আক্তার (৩০), মেয়ে সানজিদা আক্তারকে (৬) নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রত্না এবং মেয়ে তিন জনেরই মৃত্যু হয়। এ সময় ট্রাক চাপায় রত্নার পেট ফেটে কন্যা শিশুর জন্ম হয়।

পরে ওই নবজাতক নগরীর লাবিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে তার জন্ডিস, ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। এই ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করে হাসপাতালের এনআইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: