৪১ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া আকলিমার খোঁজ মিললো পাকিস্তানে

প্রকাশিত: ৩১ জুলাই ২০২২, ০৩:৪২ পিএম

স্বামীর মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত ইসমাইল শেখের মেয়ে তিন সন্তানের জননী একলিমা বেগম (৬৫)। ১৯৮১ সালের কোন একদিন হারিয়ে যান তিনি। সেসময় পরিবারের সদস্যরা বহু খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি একলিমার। দীর্ঘ ৪১ বছর পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালীতে খোঁজ মিলেছে একলিমা বেগমের। কিন্তু কিভাবে তিনি সেখানে গেলেন সে কথা বলতে পারছেন না কেউই।

একলিমার কেবল মনে আছে তার বাবা-মাসহ ভাই ও তালার গঙ্গারামপুর গ্রামের নামটি। পাকিস্তানের শিয়ালকোটের দিলওয়ালীতে পরিবারের সাথে অবস্থানরত একলিমা মৃত্যুর আগে অন্তত একবার নিজ মাতৃভূমিতে আসার ইচ্ছা পোষণ করলে তার সেখানকার পরিবারের সন্তানেরা তা ভিডিও করে ফেসবুকে যশোরের একটি গ্রুপে পোস্ট করেন।

তাদের করা ভিডিওটি চোখে পড়ে একলিমা বেগমের বড় ভাই মৃত মকবুল শেখের ছেলে মোঃ জাকিরায়া শেখের। ভিডিওতে একলিমার বলা নামগুলো তার দাদা-বাবা ও চাচাদের সাথে মিলে যাওয়ায় তিনি বিষয়টি নিয়ে বাড়িতে আলোচনা করেন এবং ভিডিও দেখিয়ে নিশ্চিত হন যে ভিডিও’র একলিমা বেগমই তার হারিয়ে যাওয়া ফুফু। এরপর তারা পারিবারিকভাবেই ভিডিও কলে যোগাযোগ করেন একলিমার সাথে।

আকলিমা বেগমের ছোট ভাই ইব্রাহিম শেখ (৫০) বলেন, সেসময় আমাদের অনেক অভাব ছিল। তার স্বামী মারা গেলে সে যেন প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিল। পরে কীভাবে যে পাকিস্তানে চলে যায় তা আমরা কেউই জানি না। সম্প্রতি তার খোঁজ পেয়েছি। আমরা চাই সে ফিরে আসুক।

একলিমা বেগমের বড় ভাই মৃত মকবুল শেখের ছেলে মোঃ জাকিরায়া শেখ বলেন, কিছু দিন আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ফুফু একলিমার খোঁজ পাই। তারপর থেকে তার সাথে বাড়ির সবার নিয়মিত কথা হচ্ছে। তিনি চান আমাদের এখানে আসতে। এজন্য তাদের কাছে ইনভাইটেশন লেটার পাঠানো হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ও পাকিস্তান অ্যাম্বাসি সহযোগিতা করলে তিনি আসতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, ফুফুর সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি তিনি পাকিস্তানের একটি সেল্টার হোমে ছিলেন। সেখানে মুহাম্মদ সিদ্দিক নামে একজনের সাথে তার পরিচয় হয় এবং পরে তারা বিয়ে করেন। মুহাম্মদ সিদ্দিক কয়েকবছর আগে মারা গিয়েছেন। সেখানে তাদের পরিবারে দুটি ছেলে এবং দুটি মেয়ে রয়েছে। আমরা চাই তারা এখানে বেড়াতে আসার সুযোগ পাক। এজন্য আমরা সবধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি।

আকলিমা বেগমের প্রথম ঘরের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে বাংলাদেশে। মেয়ে দুটি এখন স্বামীর সংসারে। আর ছেলে হেকমত আলী কাজ করেন ঢাকার একটি কারখানায়। মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ছোট বেলায় আব্বাকে হারিয়েছি। উনার কবরটা এখনও আমাদের বাড়ি আছে। আমার মারে এত বছর পরে পাইছি, তারে আপনারা ফিরিয়ে এনে দেন। আমি তারে সারাজীবন দেখবো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: