চবি ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা, পদবঞ্চিতদের মূল ফটকে তালা

প্রকাশিত: ০১ আগষ্ট ২০২২, ১২:৪৮ পিএম

তিন বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করার পরপরই ঘোষিত কমিটিতে পদবাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগে এনে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ-অবরোধ করছেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। রবিবার মধ্যরাতে কমিটি ঘোষণার পর শুরু হওয়া অবরোধ সোমবার সকালে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্তও চলছে।

সোমবার (১ আগস্ট) সকালে অবরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অপহরণ করা হয়েছে ট্রেনের গার্ড ও লোকো মাস্টারকে। সকাল থেকে আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষকদের কোনো বাস শহরে যেতে পারেনি। বন্ধ রয়েছে ক্যাম্পাসে রিকশা ও সিএনজি চলাচলও। এতে কার্যত অচল হয়ে পড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ছাড়া কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান নেতারা কমিটি গঠনের ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনা করছেন। তাদের অনেকে এটাকে ‘টাউস কমিটি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসভাপতি পদ প্রাপ্ত শায়ন দাশ গুপ্ত বলেন, যারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে শুরু থেকে জড়িত ছিলেন তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। টাকার বিনিময়ে এ কমিটিতে বাহিরের অনেকেই পদ পেয়েছেন। আমরা এ কমিটি মানি না।

আন্দোলনকারী ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ কমিটিতে জ্যেষ্ঠতা রক্ষা হয়নি। রাজপথের নিবেদিত কর্মীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে আছে অছাত্র ও বিবাহিতরা। অনেকে টাকার বিনিময়ে পদ পেয়েছেন। এসব কারণে আমরা বঙ্গবন্ধু আদর্শের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ অবরোধের ডাক দিয়েছি। কমিটিতে মাঠের প্রকৃত কর্মীদের অন্তর্ভুক্তের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধ থাকবে।

এদিকে নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে ট্রেন ছাড়তে অপারগতা প্রকাশ করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ষোলশহর স্টেশন মাস্টার তন্ময় চৌধুরী বলেন, অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গামী কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি। ঝাউতলা রেলস্টেশন থেকে আমাদের এক লোকো মাস্টার ও গার্ডকে অপহরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ৩৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সংসদ। এরপর রাত থেকে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশা অনুযায়ী পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা আন্দোলন শুরু করেন। এর আগে ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই সর্বশেষ চবি শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর দুই দফায় শাখা ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সবশেষ ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এ পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ১৯ মাস পর ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই চবি ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটিতে রেজাউল হক রুবেলকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই সদস্যের কমিটি দেওয়ার ৩ বছর ১৬ দিন পর অবশেষে পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেয়েছে চবি ছাত্রলীগ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: