শরীয়তপুরে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত: ০৬ আগষ্ট ২০২২, ১১:৫৮ এএম

আসাদ গাজী, শরীয়তপুর থেকে: শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুরের সহকারি পরিচালক আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। ওই ভূমি কর্মকর্তার নাম আব্দুস সালাম খান (৫২)। তিনি জেলার জাজিরা উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা। তিনি শরীয়তপুর পৌরসভার দক্ষিন বালুচরা এলাকার বাসিন্দা।

ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠে। ২০২০ সালে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক কমলেশ মন্ডল ২০১০ সাল হতে আব্দুস সালামের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেন। তখন আব্দুস সালাম নড়িয়ার ভোজেশ্বর ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা ছিলেন। দুদকের অনুসন্ধান শুরু হলে জেলা প্রশাসন থেকে তাকে সদরের চন্দ্রপুর ইউনিয়নে বদলি করা হয়। এরপর তাকে জাজিরার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নে বদলি করা হয়।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর সমন্বিত দুদক কার্যলয়ের সহকারি পরিচালক আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন অনুসন্ধান করি। এতে দেখা গেছে তিনি অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার তথ্য প্রমান দুদকের হাতে রয়েছে। পরে আমরা কমিশনের কাছে রিপোর্ট পাঠাই। দুদকের আইন অনুযায়ী যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ কারনে দুদক কমিশনের অনুমতিতে মামলা করা হয়েছে।

অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রতিবেদনে দেখা যায়, সালাম তার সম্পদের যে হিসাব জমা দিয়েছেন, তাতে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৯ টাকা গোপন করেছেন, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ ছাড়া তিনি ১২ লাখ ৬১ হাজার ৪৪৩ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রেখেছেন যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গত ২০ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় থেকে আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দেয়া হয়। ১ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় মাদারীপুর থেকে মামলা করার জন্য একজন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়। তখন বৃহস্পতিবার সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান মামলাটি করেন।

ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সালামের কাছে মামলার বিষটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার বিষটি আমি আজকে শুনেছি। আমার কোন আয় বহির্ভূত কোন সম্পদ নেই। আমি ২০১৫ সাল থেকে আয়কর রির্টান দিয়ে আসছি। আমাকে কোন রিপোর্ট দেয়া হয়নি। মামলার কাগজ হাতে পেলে জানতে পারবো কেন আমার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হলো।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের সহকারি পরিচালক শফিউল্লাহ বলেন, আয় বহির্ভূত সস্পদ অর্জনের প্রমান পাওয়ায় ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। শিগগিরই তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। তদন্ত কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তদন্ত স্বার্থে প্রয়োজনে তাকে গ্রেফতার করা হবে।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ পারভেজ হাসান জানান, শুনেছি এক জন ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলছে। তবে মামলা হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: