আখাউড়ায় ১১০৯ বছরের পুরোনো মসজিদ!

প্রকাশিত: ০৭ আগষ্ট ২০২২, ১০:৪৫ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পৌর এলাকার খড়মপুরের শাহ্পীর কল্লা শহীদ মাজারে অবস্থিত মসজিদটির বর্তমান বয়স ১১০৯ বছর। মসজিদের দেয়ালে লেখা রয়েছে সন, ৩২৩ ত্রিপুরা। ‘তিপ্রা’ বা ‘ত্রিপুরা’ সন বঙ্গাব্দ অর্থাৎ বাংলা সন সূচনার তিন বছর আগের।

মসজিদে সনের সঙ্গেই লেখা থাকা ‘ত্রিপুরা’ হলো অঞ্চলের নাম। এক সময় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যেরে অধীনে ছিলো এ আখাউড়া এলাকা। যে কারণে মসজিদের স্থাপনা সনের সঙ্গে ত্রিপুরা লেখা আছে বলে স্থানীয়দের ধারনা।

মসজিদটির গম্বুজটি বেশ সুন্দর, মুজাইক করা। চুন, সুড়কির দেয়ালে আছে হালকা কারুকাজ। আধুনিকায়ন করতে গিয়ে মসজিদের মূল ভবনের সামনের অংশ টিনশেড দিয়ে বাড়ানো হয়েছে। এর সামনেই অজু করার জায়গা। পুরাতন মসজিদটির পূর্ব পাশ ঘেঁষেই নতুন মসজিদ। পেছনের দিকে পুরাতন কোরআন শরীফ মাটি দেওয়ার জায়গা, যেটি অনেকটা সংরক্ষিত। মসজিদের দেয়াল ও গম্বুজের পুরুত্ব সাধারণের চেয়ের অনেক বেশি। মসজিদের পাশেই মাজারের রীতি অনুযায়ী লাল নিশানা উড়ানো আছে।

মসজিদের গায়ে লেখা থাকা সন ৩২৩ লেখা থেকেই এর নির্মাণ সম্পর্কে ধারণা দেন স্থানীয়রা। মসজিদটি হাজার বছরের পুরো বলেই তারা একমত পোষণ করেন।

জানা যায়, ঐতিহাসিকভাবে ত্রিপুরা সন ব্রিটিশ রাজের অধীনে ‘তিপ্রা’ রাজ্যের সব সরকারি বিষয়ে প্রচলিত ছিল। ১৯৪৯ সালে ভারতের প্রজাতন্ত্রে ত্রিপুরার যোগদানের সঙ্গে সঙ্গে ত্রিপুরী বর্ষপঞ্জির আনুষ্ঠানিক ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।

১৩০৩ সালে হযরত শাহজালাল (র.) ইসলাম প্রচার করতে ৩৬৯ জন আউলিয়া নিয়ে সিলেটে আসেন। হযরত শাহজালাল এর অন্যতম শিষ্য ছিলেন সৈয়দ আহমেদ গেছুদারাজ। অনুমান করা হয়, এক যুদ্ধে শহীদ হওয়া গেছুদারাজের মাথা তিতাস নদীর স্রোতে ভেসে খড়মপুর আসে। খড়মপুরেই গেছুদারাজের মাথা দাফন করা হয়। প্রতি বছরই মাজারটিতে ওরস অনুষ্ঠিত হয়।

খড়মপুর মাজার পরিচালনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসেম খান খাদেম হাসান বলেন, ‘মসজিদটি হাজার বছরের পুরোনো। মসজিদের গায়ে থাকা লেখা থেকেই এর নির্মাণ সন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এ মসজিদটি আমাদের এতিহ্য।

খড়মপুর মাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খাদেম মিন্টু বিডি২৪লাইভকে বলেন, ঐতিহ্য হিসেবে এটিকে না ভেঙেই পাশে নতুন মসজিদ করা হয়েছে। বেশি পুরোনো হয়ে যাওয়ায় আমরা এখন মসজিদের ভেতরে না পড়িয়ে নতুন নির্মাণ করা বারান্দায় শিশুদেরকে ধর্মীয় পাঠদান করানো হয়। নিয়মিত সংস্কার কাজ করা হয় এ মসজিদের।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: