ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছয়-সাতজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কর্মবিরতির হুমকি দিয়েছে ঢামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ)।
জানা যায় সোমবার (৮ আগষ্ট) রাত নয়টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই ঘটনা ঘটে বলে জানান ভুক্তভোগী চিকিৎসক এ কে এম সাজ্জাদ হোসেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন।
ভুক্তভোগী সাজ্জাদ জানায়, লাইব্রেরিতে পড়াশোনা শেষে রাত নয়টার দিকে আমি শহীদ মিনারের দিকে যাই। সেখানে আমি একা একা বসে বাদাম খাচ্ছিলাম। এক পর্যায়ে দুই-তিন জন করে একেকটা দলে ভাগ হয়ে বেশ কিছু ছেলে শহীদ মিনারে আগতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে, অনেককে সেখান থেকে উঠিয়ে দিচ্ছে। তারা কেন এটা করছিলো আমার জানা নেই। এক পর্যায়ে তিনজন এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে যে, আমি সেখানে কী করছি। আমি বললাম, ‘আমি বসে আছি।’
এক পর্যায়ে তারা আমার পরিচয় জানতে চায়। আমি আমার পরিচয় দিলে তারা আমার পরিচয়পত্র দেখতে চায়। আমার কাছে পরিচয়পত্র নেই জানালে তারা আমাকে বলে, ‘পরিচয়পত্র নেই কেন? আমাদের কাছে তো পরিচয়পত্র আছে।’ তখন আমি বললাম, ‘সবাই কী সবসময় পরিচয়পত্র নিয়ে ঘোরে?’ এই কথা বলার পর সঙ্গে সঙ্গে আমাকে একজন থাপ্পড় মেরে বসে। এরপর আরো দুই তিন জন এসে আমাকে চড়-থাপ্পর মারা শুরু করে।
মারধরের একপর্যায়ে আমি চিৎকার করে বলে উঠি, ‘আপনারা চাইলে আমার সঙ্গে ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে আমার পরিচয়পত্র দেখে আসতে পারেন। এক পর্যায়ে তারা আমাকে দ্রুত ওই স্থান থেকে বিদায় করার জন্যে তৎপর হয়ে ওঠে। একজন আমার কানের ওপর জোরে থাপ্পর দিলে আমি বসে পড়ি।
তিনি আরো বলেন, কেন বসে পড়লা? এই অপরাধে একজন জুতা পায়ে আমার মুখে লাথি মারে। সঙ্গে সঙ্গে নাক দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়। রিকশায় ওঠার আগ পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ জনের মতো যেভাবে পেয়েছে সেভাবেই মারধর করে।
মারধরকারীদের কাউকে চিনতে পেরেছেন কিনা জানতে চাইলে সাজ্জাদ বলেন, তাদের প্রায় সবার গায়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোওয়ালা টি-শার্ট ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল যে, তাদের পরিচয় জানা বা বোঝার উপায় ছিল না। তবে সবাই একটু হালকা পাতলা গড়নের ছিল।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আজ মঙ্গলবার শাহবাগ থানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিস ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালকের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এই বিষয়ে কোন অভিযোগ এখনো আমাদের কাছে আসেনি। অভিযোগ আসলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যদি কেউ হয়ে থাকে তাহলে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কর্মবিরতির হুমকি দিয়েছে ঢামেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ)। সংগঠনটির সভাপতি ডা. মো. মহিউদ্দিন জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মারুফ-উল আহসান শামীম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে এই হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিসি টিভি ফুটেজের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে লাগাতার কর্মবিরতিসহ পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচী নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ বাধ্য হবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: