হাওয়া সিনেমায় বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন, দাবি বন কর্মকর্তাদের
চৌধুরী অভিনীত ‘হাওয়া’ সিনেমাটি মুক্তির পূর্বেই এরইমধ্যে সারা দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে নানান কারণে। তবে সম্প্রতি আলোচিত এই সিনেমাটি নিয়ে ‘হাওয়া’য় শালিক পাখি খাওয়া নিয়ে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সিনেমাটি দেখে জানিয়েছে, এ সিনেমায় বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে।
এর আগে আলোচিত এই চলচিত্রটি নিয়ে শালিক পাখিকে খাঁচায় বন্দি রাখা, মেরে খাওয়া এবং শাপলা পাতা মাছ ধরার দৃশ্য আইনের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ উঠলে সিনেমাটি দেখার সিদ্ধান্ত নেয় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। তাদের চার কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে সিনেমাটি দেখেন। এরপর পরিদর্শক অসীম মল্লিক বলেন, সিনেমায় মাছ ধরা নৌকায় দীর্ঘসময় একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় বন্দি রাখা হয় এবং শেষে পাখির মাংস খাওয়া হয়, যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর সুস্পষ্ট বিরোধী। কেননা বন্যপ্রাণীকে খাঁচায় আটক রাখা কিংবা বন্দি রাখা আইনের লঙ্ঘন।
তবে শালিকের মাংসই খাওয়া হয়েছে এ বিষয়ে নিশ্চিত কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা তদন্ত করার আগে বলা যাচ্ছে না। এখন বলতে চাই যে পাখিটাকে আটকে রাখা হয়েছে, সেটা সত্যিকারের শালিক পাখি। এরমধ্য দিয়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘন হয়েছে। পাখির মাংসই খাওয়া হয়েছে কি না, তদন্ত শেষে সেটা বলা যাবে। তবে হাওয়ার নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন দাবি করেছিলেন, সিনেমায় সত্যিকারের কোনো বন্যপ্রাণীকে মারা হয়নি। এটা একটা ফিকশনাল ওয়ার্ক। এখানে কোনো বন্যপ্রাণী হত্যা করা হয়নি। দৃশ্যায়নের প্রয়োজনে এখানে বিকল্প ব্যবহার করা হয়েছে। সিনেমার শুরুতেই সেই ‘ডিসক্লেইমার’ দেওয়া হয়েছিল। যারা আলোচনা করছে, তারা সিনেমার শুরুটা হয়ত ‘মিস’ করেছেন।
তবে সিনেমার শুরুতে এমন কোনো বার্তা চোখে পড়েনি বলেও জানান অসীম মল্লিক। তিনি বলেন, ‘সিগারেট খাওয়ার দৃশ্যে পর্দায় লেখা ওঠে- ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আমার মনে হয়, সিনেমা কর্তৃপক্ষ বন্যপ্রাণীর বিষয়েও এমন সতর্কবার্তা রাখতে পারতেন’। তিনি আরো জানান, ‘আমরা রিপোর্ট পেশ করব। আশা করি, আইন অমান্যকারীকে শাস্তির আওতায় আসতে হবে। আইনে বলা আছে, বন্যপ্রাণীকে খাচায় লালন পালন বা নিজের দখলে রাখলে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা ও দুই বছরের জেল হতে পারে’।
এই কর্মকর্তা আরো জানান, ছবিতে যা দেখানো হয়েছে, তাতে মাংসটা যে মুরগির, তা দর্শক বুঝবেন না। দর্শককে বোঝানো হয়েছে এটি শালিক পাখিরই মাংস। এতে করে উপস্থিত এক দেড় হাজার দর্শকের মাঝে ভুল বার্তা গেছে। এভাবে সিনেমার লাখ লাখ দর্শক বুঝবেন যে, মাছ ধরার নৌকায় শালিক পাখি রাখতে হবে, যাতে মাঝির নৌকা হারিয়ে গেলে পাখির মাধ্যমে সাগরের তীর খোঁজা যাবে এবং দুঃসময়ে পাখির মাংসও খাওয়া যাবে। সিনেমা দেখা দলের সদস্য বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন বিভাগের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল সাদিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘শালিক হত্যা করা হয়েছে কি না, আমরা সেটা দেখতে আসিনি। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২তে স্পষ্ট করে বলা আছে, যদি কেউ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বন্যপ্রাণী আইন ভঙ্গ অথবা অপরাধ সংগঠনে সহায়তা করে, তাহলেই বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হবে। শালিককে হত্যা করা হলো কি না, সেটা বিষয় না। বিষয় হল দর্শকের উদ্দেশে কী বার্তা দেওয়া হচ্ছে’।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, সিমোয় বন্যপ্রাণী ব্যবহারের ক্ষেত্রে বন অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে হবে। যদি অনুমতি মেলে তাহলে দৃশ্যের খাতিরে বন্যপ্রাণী ব্যবহার করা যাবে। অনুমতি না পেলে তা করা যাবে না।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: