বুয়েটে ছাত্রলীগের কর্মসূচি, বিক্ষোভে সাধারণ শিক্ষার্থী
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজনীতি নিষিদ্ধ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সেমিনার হলে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ব্যানারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হওয়াতে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৬টার দিকে এ সভায় শুরু হলে, সভা শুরুর পরপরই এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করার সিদ্ধান্ত নেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।
প্রোগ্রাম শেষে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাল মাহমুদ বিক্ষু্ব্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম নয়। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে তার জন্য দোয়ার প্রোগ্রাম। এসময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সমস্বরে বলে উঠেন, তাহলে ছাত্রলীগের ব্যানারে কেন? আপনাদের বুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবেও করতে পারতেন!
আবরার ফাহাদ হত্যার পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। সাবেল ছাত্রলীগ নেতারা রাজনৈতিক সভা নয় বরং বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়ার সভা বলে দাবি করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানতে চান, ছাত্রলীগের ব্যানারে কেন। এটা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় এবং কিছুটা উত্তেজনা ছড়ায়। শিক্ষার্থীদের দাবি, শোক দিবসের কোনো অনুষ্ঠান করলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ করবে। কোনো রাজনৈতিক ব্যানারে প্রোগ্রাম করতে দেয়া হবে না।
রাত ৯টায় একটি প্রেস ব্রিফিং করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৯৭৫ সালের এই মাসের ১৫ তারিখ বাঙালি হারায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে গড়ে তুলতে আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি। তারই ধারাবাহিকতায় নিরাপদ এবং সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন নিশ্চিত করা সকল শিক্ষার্থীর মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য, যেই ছাত্ররাজনীতি একসময় দেশের ক্রান্তিলগ্নে অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছিল, পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করে জন্ম দিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের, সেই ছাত্ররাজনীতি আজ ক্ষমতার অপব্যবহারে কলুষিত।
তারা আরও বলেন, বুয়েট ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে নিরীহ শিক্ষার্থীদের বারবার প্রাণ ঝরেছে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনগুলোর অপকর্মে। সবশেষ ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নৃশংস অত্যাচারে আবরার ফাহাদ নিহত হন। এর প্রতিবাদে বুয়েটের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও আজ ১৩ আগস্ট, ২০২২ তারিখে সেমিনার হল বুয়েট অডিটোরিয়াম কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বুয়েটের সাবেক নেতৃবৃন্দদের আয়োজনে একটি ব্যানার দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, গত ২ জুলাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলে আরিফ রায়হান দিপের স্মৃতিফলকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ৮ জুন সাবেকুন নাহার সনি’র স্মৃতিফলকে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে ব্যানার টানানো হয়। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের বারবার নিজেদের উপস্থিতি জানিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি পাওয়ায় বুয়েট কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এমন কার্যক্রমের ব্যাপারে আমরা, বুয়েটের সকল সাধারণ শিক্ষার্থী, কর্তৃপক্ষের অবস্থান এবং সুস্পষ্ট জবাব আশা করছি।
বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক (ডি এস ডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বলা যায় তারা আমাদের থেকে অনুমতি নিয়েছে, আবার নেয়ওনি। অনুমতি নেওয়ার সময় জানিয়েছে, তারা সাবেক শিক্ষার্থী, পুনর্মিলনী করবে ক্যাম্পাসে। সে কারণে আমরা অনুমতি দেই। আমরা যদি জানতাম তারা বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তাহলে অনুমতিই দিতাম না। তাই শিক্ষার্থীদের বিক্ষুব্ধ হওয়ার অধিকার আছে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: