প্রক্সি দিতে এসে আটক ওলামা লীগ নেতার ছেলে

প্রকাশিত: ১৪ আগষ্ট ২০২২, ১২:১১ এএম

কামরুল হাসান, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে:গুচ্ছের মানবিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে সনদ ও পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে আটক হয়েছে মাহবুব হাসান নামের এক শিক্ষার্থী।

আটক হওয়া শিক্ষার্থী নিজেকে কেন্দ্রীয় ওলামা লীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহীম পীরের সন্তান দাবী করেন। যার সত্যতা নিশ্চিত করেছে ওলামা লীগ নেতা নিজেই। আটক হওয়া শিক্ষার্থীর বাড়ি শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার ছোট মালিঝিকান্দা গ্রামে। মাহবুব রহমান শ্রীমতী সরকারি কলেজ ও হাতেম আলী সিটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ইংরিজি বিভাগে ২০১৮ সালে স্নাতক পাশের একটি ভুয়া সার্টিফিকেটও আছে।

শনিবার ১৩ আগস্ট ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ৬০১ নম্বর কক্ষের কর্তব্যরত নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কে.এম. মাহমুদুল হক পরীক্ষার্থীর সার্টিফিকেট দেখে সন্দেহ হয়।পরে প্রক্টরিয়াল বডির জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সন্দেহভাজন শিক্ষার্থী ভিন্ন শিক্ষার্থীর পরিচয়ে প্রক্সি দিতে এসেছিলো।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরও ভয়াবহ চিত্র।ভ্রাম্যমাণ আদালতের পর্যালোচনায় জানা যায়, আটককৃত শিক্ষার্থী মাহবুব হোসাইনের মানিব্যাগ থেকে একই নাম সম্বলিত কিন্তু ভিন্ন বয়সের ছয়টি এনআইডি পাওয়া যায়। অনার্সের ভুয়া সার্টিফিকেট, ব্লেড এবং ঔষধও পাওয়া যায়।

প্রক্সি দিতে আসা শিক্ষার্থীর বাবা মো.আব্দুর রহমান মুঠোফোনে জানান, আমার ছেলে মানসিক রোগে আক্রান্ত। তার এই অন্যায়কে লঘুভাবে দেখলে কৃতজ্ঞ থাকবো। পরীক্ষা কক্ষ পরিদর্শককালে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে আসা পরীক্ষার্থীর ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য অধ্যাপক ড.সৌমিত্র শেখর দে বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে আমাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে। আমি ইতোমধ্যে বিষয়টির অবগত হয়েছি। আমাদের এখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে। প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে প্রক্সি দিতে আসার পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড.তপন কুমার সরকার বলেন, আমরা এখনো তার প্রকৃত পরিচয় জানতে পারি নি। তার সকল সনদপত্রই ভুয়া। আমরা তাকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান বলেন,তার একাধিক কাগজপত্রে নাম,ছবি, ঠিকানা ও পরিচয়পত্রে ভুল পাওয়া গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বর্তমানে সে পুলিশি হেফাজতে। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কোনোভাবেই এই রকম জালিয়াতিকে প্রশ্রয় দেবে না। এরকম জালিয়াতির বিরুদ্ধে আমরা কঠিন হুশিয়ারি জানাচ্ছি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: