সুন্দরী স্ত্রীর ফাঁদে ফেলে ভিডিও করে বিত্তবানদের ব্ল্যাকমেইল!

প্রকাশিত: ২৪ আগষ্ট ২০২২, ০৬:১২ পিএম

সুন্দরাী স্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণীকে ব্যবহার করে ধনাঢ্য ও করপোরেট ব্যক্তিদের টার্গেট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাঠানো হতো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। এরপর বন্ধুত্ব গড়ে ডেকে নেওয়া হতো বাসায় বা হোটেলে। সেখানে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের বিবস্ত্র করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করা হতো। গত ২ বছরে এই ফাঁদে প্রায় ৫০ জন ধনাঢ্য ও করপোরেট ব্যক্তির আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণের পর ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চক্রটি হাতিয়ে নেয় কয়েক কোটি টাকা।

এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের মূলহোতা আল মাহমুদ ওরফে মামুন ও তার স্ত্রী তানিয়া আক্তার ও সহযোগী মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া। এই দুই নারীর ছবি ও ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে নির্দিষ্ট কোনও আবাসিক ফ্ল্যাট বা হোটেলে আমন্ত্রণ জানাতো। ভুক্তভোগীরা ওই স্থানে গেলে তাদেরকে জিম্মি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করা হতো।

এমন একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) ভোরে রাজধানীর ভাটারা ও দক্ষিণখানে অভিযান পরিচালনা করে দুই নারীসহ চক্রের সাত জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)। গ্রেফতারকৃত হলো- আল মাহমুদ ওরফে মামুন, আকরাম হোসেন ওরফে আকিব, মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া, তানিয়া আক্তার, মো. রুবেল, মো. মহসীন ও মো. ইমরান। এ সময় তাদের কাছ থেকে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ কাজে ব্যবহৃত ১৪টি মোবাইল ফোন ও ২টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন গত ২২ জুলাই তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে মাস্তুরা আক্তার প্রিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ হয়। গত ১০ আগস্ট প্রিয়া কৌশলে রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকায় তার বান্ধবীর বাসায় নিয়ে যান।

রুমের ভেতরে প্রবেশ করার পর পূর্বপরিকল্পিতভাবে প্রিয়া ও তার সহযোগীরা ভিকটিমকে বিবস্ত্র করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ক্যামেরায় ধারণকৃত এসব ভিডিও দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছে হিসাবে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ভুক্তভোগীর বিকাশের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক ১ লাখ টাকা ও ব্যাংক চেকের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা দেন।

সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে ভুক্তভোগী ঘটনা চেপে গেলেও এক সপ্তাহ পর গ্রেফতার আল মাহমুদ ভুক্তভোগীর কাছে আরও ২ লাখ টাকা দাবি করেন। দাবি করা দুই লাখ টাকা না দিলে ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। এরপর ভুক্তভোগী র‍্যাব-১ এর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করে আইনগত সহায়তা চান। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি জানান, চক্রটি গত ২ বছরে অর্ধ শতাধিক ভুক্তভোগীকে ব্ল্যাকমেইল করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। অসদুপায়ে অর্জিত টাকায় তারা রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বিলাসবহুল জীবন-যাপন করে আসছিল।

গ্রেফতার দুই নারী সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার আল মাহমুদের স্ত্রী তানিয়া আক্তার। তারা দুজনে পরিকল্পিতভাবে এই কাজে জড়িয়েছে। এছাড়া গ্রেফতার মাস্তুরা আক্তার প্রিয়া একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: