ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহাল দশা
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের এলাকার এখন বেহাল দশা। মহাসড়কটি দেখলে মনে হয় খানাখন্দে ভরপুর গ্রামের একটি সড়ক। মহাসড়কের দুটি টোল প্লাজার চারিদিকে খানাখন্দে ভরপুর এবরো তেবরো সড়কটি একটু বৃষ্টিতে পানি জমে যান চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়ে। প্রতিদিনই সংস্কার কাজ করলে পরদিনই আবারো এসব জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। নিম্নমানের সংস্কার কাজ নিয়ে জনতার মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। প্রতিদিনই মহাসড়কের এসব জায়গায় দুঘর্টনায় প্রানহানিসহ অনেকেই পঙ্গু হচ্ছেন। প্রশ্ন উঠেছে প্রতিদিন এসব টোল প্লাজা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আদায় হলেও দেখার কি কেউ নেই। প্রতিদিন চরম দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে হাজার যাত্রী সাধারনকে। বিশেষ করে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার অংশের বিভিন্ন স্থানে বেহাল দশা বিরাজ করছে। টোল প্লাজা দুটি হচ্ছে নবীগঞ্জের মহাসড়কের রোস্তমপুর টোলপ্লাজা ও শেরপুর কুশিয়ারা নদীর অপারে টোল প্লাজা।
নবীগঞ্জ উপজেলার শেরপুর অংশ থেকে শুরু করে আউশকান্দি বাজার এলাকা, মিনাজপুর, জালালপুর, সৈয়দপুর, গোপলার বাজার, দেবপাড়া বাজার, ফুলতলী বাজার, পানিউমদা বাজার, বড়চর, বাহুবল, মীর পুর এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কটি ভেঙ্গে খানা খন্দে ভরপুর হযে গেছে। মাঝে মধ্যে এক থেকে দেড় ফুট বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। মহা সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গ্রামের মেঠোপথের সৃষ্ঠি হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমাট হয়ে যায়। এখানে বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা নিয়েই হাজার হাজার যাত্রীদের চলাচল করতে হচ্ছে।
এক বছর আগে মেরামত করা হলেও বর্তমানে এর বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। এ যেন এক অভিভাবকহীন মহাসড়ক! কেউ যেন এর দায় নিতে রাজি নয়। খানা-খন্দ আর যত্রতত্র গর্তে পুরো রাস্তা যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। যাত্রীবাহি বাসসহ দেশী-বিদেশী পর্যটকবাহী গাড়ী ছাড়াও বিভিন্ন রকম যানবাহন প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। মহাসড়কের হানিফ বাসের চালক রহিম আলী বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ’র উদাসীনাতায় সড়কটির এমন অবস্থা বলে দাবী করেছেন।
তিনি বলেন, আমার জীবনের ঝুকি নিয়ে বাস চালাই যাত্রী অনেক সময় চিৎকার আর হইচই করতে দেখি। কি করবো আল্লাহ ভরসা করে চালাই।
মামুন গাড়ির চালক কুতুব আলী বলেন“ কি করমু বলেন “এসড়কে একদিন গাড়ি চালালে তিনদিন যায় শরিলের (শরীর) ব্যাথায়” আর যাত্রীর অবস্থা তো আর বললাম না তারা অনেকেই বিকল্প সড়কে বাস নিতে অনুরোধ করে যন্ত্রনায় অতীষ্ঠ হয়ে।
ট্রাক চালক কদর আলী বলেন, আমরা মাল বোঝাই ট্রাক এসড়কটি দিয়ে নিতে চাই না তবু পেটের কারনে নিতে হয়। প্রতিদিনই কোন না কোন ট্রাক একসিডেন্ট হচ্ছে। যাত্রী আব্দুল আলী বলেন, ভাঙ্গা সড়কটি দিয়ে বড় বড় ট্রাক চলাচলের জন্যেই আরো খারাপ হচ্ছে। দ্রুত মেরামত করা না হলে মহাসড়কের নবীগঞ্জ অংশটি অনুপযোগি হয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য যে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মালবোঝাই ট্রাক, লরি সহ দুরপাল্লার যাত্রীবাহি বাস, মাইক্রোবাস, কার ও এম্বুল্যান্স চলাচল করে। কিন্তু রাস্তা খারাপ হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।
মহাসড়কের এসব গর্ত রোড্স এন্ড হাইওয়ে কর্তৃপক্ষের নজরে পড়লে রাস্তা সংস্কারের জন্য মাঝে মধ্যে দেখা যায় শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। কিন্তু নিম্ন মানের মাল ব্যবহার করে নাম মাত্র কাজ করার ফলে মাস খানেক যেতে না যেতে আবার পূণরায় রাস্তায় গর্তসহ খানা খন্দে পরিনত হয়ে যায়।
রাস্তার বড় বড় গর্তের কারণে রাস্তা ছেড়ে দূরপাল্লার গাড়িগুলো পথচারী চলাচলের রাস্তার পাশের অংশটি ব্যবহার করছে। এর ফলে মহা সড়কের পাশ্ববর্তী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রসাগামী শিক্ষার্থীরা প্রাণহানির ভয় নিয়ে যাতায়াত করছে। এমনকি রাস্তার পাশের বাড়ি- ঘরগুলোরও নেই কোন নিরাপত্তা। যে কোন সময় দ্রুতগামী গাড়ি গুলো চিটকে পড়তে পারে তাদের বাড়ির উপরে। ইতিপূর্বে এমন ঘটনাও ঘটেছে। এই রাস্তার দৃশ্যগুলো দেখার যেন কেউ নেই?
এ ব্যাপারে দেবপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহরিয়ার নাদির সুমন বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতায় খুব শিগগিরই মহা-সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করে দূর্ভোগ আর দুর্ঘটনার হাত থেকে মানুষকে রেহাই দিতে সড়ক, সেতু ও পরিবহন মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
নবীগঞ্জ-বাহুবল এলাকার সংসদ সদস্য গাজী শাহনেওয়াজ মিলাদ বলেন জনস্বার্থে আমি মহাসড়কের কথাটি জাতীয় সংসদে তুলে ধরবো। প্রয়োজনে আমি জন গুরুত্বপূর্ন নোটিশ দিয়ে সড়ক, সেতু ও পরিবহন মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করবো।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোঃ ফয়সল বলেন, আমরা এসড়কের অবস্থা এখন স্বল্প মেয়াদী কাজ চলমান রয়েছে, আপাদত বৃষ্ট্রির জন্য কিছু জায়গায় কাজ বন্ধ আছে। সংস্কারে অনিয়ম সর্ম্পকে বলেন, এটা মন্ত্রনালয়ের লোকজন মনিটরিং করেন। তিনি বলেন এখানে র্দীঘ মেয়াদী কাজ করার সুযোগ নেই। এই মহাসড়কটি কিছুদিনের মধ্যে ৪লাইনে উন্নতি হবে। ভুমি অধিগ্রহনের জন্য ডিসি অফিসে কাগজ পত্র জমা দেয়া হয়েছে। তাদের কাজ শেষ হলে চলতি বছরেই ৪লাইনের কাজ শুরু হবে। তখন মহাসড়কের মধ্যে ঘনঘন কাপেটিং উঠবে না।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: