রানির মতো পোশাক পরায় মানবাধিকার কর্মীর কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:১৬ পিএম

রাজপরিবারের সদস্যদের সমালোচনা নিষিদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে থাইল্যান্ডে।সম্প্রতি রানির মতো পোশাক পরে বিক্ষোভ করার অভিযোগে থাইল্যান্ডের এক মানবাধিকারকর্মীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। রানির মতো পোশাক পরে রাজতন্ত্রের অবমাননা করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত গতকাল সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) এই দণ্ড ঘোষণা করেছে।

সম্প্রতি রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই অধিকার কর্মীর নাম জাতুপর্ন ‘নিউ’ সাইউয়েং (২৫)। ২০২০ সালে ব্যাংককে এক রাজনৈতিক বিক্ষোভের সময় তিনি গোলাপি রঙের একটি পোশাক পরেছিলেন।তবে তার বিরুদ্ধে আনা রাজতন্ত্র অবমাননার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। জাতুপর্ন বলেছেন, তিনি কেবল ঐতিহ্যবাহী একটি পোশাক পরেছিলেন।

এর আগে সরকারবিরোধীদের টানা আন্দোলন দমাতে রাজ পরিবারের সমালোচনা বন্ধের বিতর্কিত আইন আবারো বলবৎ করে থাইল্যান্ড। তবে স্থানীয় মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সোমবার আদালত যে রায় ঘোষণা করেছে তার তীব্র সমালোচনা করেছে। প্রাথমিকভাবে জাতুর্পনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও পরে তা কমিয়ে দুই বছর করা হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালে ব্যাংককে এক বিক্ষোভ-প্রতিবাদে গোলাপি রংঙের সিল্কের একটি পোশাক পরেছিলেন। বিক্ষোভস্থলে তিনি লালগালিচার ওপর দিয়ে হেঁটে যান। এ সময় তার মাথার ওপরে একজন ছাতা ধরে ছিলেন। থাইল্যান্ডের রানি সুথিদাকে প্রায়ই সরকারি অনুষ্ঠানে সিল্কের পোশাক পরতে দেখা যায়। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অনুষ্ঠানে থাই রাজপরিবারের সদস্যদের মাথার ওপর ছাতাও ধরে থাকেন একজন।

আদালতের রায় ঘোষণার আগে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতুপর্ন বলেছেন, ‘কাউকে বিদ্রুপ করার কোন উদ্দেশ্য আমার ছিল না। আমি সেদিন থাই ঐতিহ্যের আদলে নিজের জন্য একটি পোশাক পরেছিলাম।’ওই বছর রাজা ভাজিরালংকর্নের কন্যারা একটি ফ্যাশন শো আয়োজন করেছিলেন। সেই ফ্যাশন শো’র সময়ে আন্দোলনকারীরা ব্যাংককে রাজতন্ত্র এবং সামরিক সরকারের ওপর রাজপরিবারের প্রভাবের সমালোচনা করে ফ্যাশন শো আয়োজন করেন।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মুখপাত্র বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক অনুষ্ঠান হিসেবে ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। পথ উৎসবের মতো শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠান ছিল সেটি। শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে গত বছর দেশটির সাবেক এক সরকারি কর্মীকে ৪৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।তবে রাজতন্ত্র অবমাননার এসব ঘটনায় কোনও মন্তব্য করেনি থাই রাজপরিবার। থাইল্যান্ডের আন্দোলনকারীরা প্রাথমিকভাবে সেনা-সমর্থিত সরকারকে লক্ষ্যবস্তু করলেও পরবর্তীতের তাদের সমালোচনার কেন্দ্রে চলে আসে নতুন রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যরা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: