ঘাটাইলে কাজ না করে রাস্তার টাকা আত্মসাৎ

শফিকুল ইসলাম, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) থেকে: ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন তহবিলের (রাজস্ব) ১৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবুর বিরুদ্ধে। কাজ না করেই বিভিন্ন প্রকল্পের নামে এ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঘাটাইলের ৮ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
ইউনিয়নগুলো হলো- ঘাটাইল সদর, দিগর, লোকেরপাড়া, আনেহলা, দিঘলকান্দি, দেউলাবাড়ী, দেওপাড়া, জামুরিয়া। নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রের যাতায়াতের রাস্তা মেরামত বা সংস্কারের জন্য ২ লাখ টাকা করে ব্যয় ধরে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। গত ১১ই নভেম্বর এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা প্রকৌশলী প্রকল্পের প্রাক্কলন করবে। আর কাজ বাস্তবায়ন করার কথা ইউনিয়ন সচিবদের মাধ্যমে প্রকল্প কমিটি। কিন্তু কোনো প্রকল্প কমিটি তো দূরের কথা, সচিবদেরকেও জানানো হয়নি। প্রচলিত সকল বিধি-বিধানকে উপেক্ষা করে কাগজে-কলমে প্রকল্প দেখিয়ে রাজস্ব তহবিলের ১৬ লাখ টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
সরজমিনে দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের পোয়াকোলাহা পাকা রাস্তা হতে পোয়াকোলাহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় গেলে অভিযোগের সত্যতা মেলে। কোলাহা মাস্টারপাড়া গ্রামের আ. জব্বার বলেন, নির্বাচনের পর মেম্বার রাস্তা মেরামত করেছে। নির্বাচনের আগে এ রাস্তায় কোনো কাজ হয়নি। একই অবস্থা ৩নং জামুরিয়া ইউনিয়নের গুনগ্রাম হয়ে চানতারা রাস্তা থেকে দক্ষিণ রাউয়াগ্রাম রাস্তারও। এ রাস্তা মেরামতের জন্যও বরাদ্দ দেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানায়, রাস্তাটি আগে থেকে পাকা। নির্বাচনের আগে রাস্তাটির কোনো মেরামত করা হয়নি। শুধু এ দুটি রাস্তা নয়, বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে একই চিত্র পাওয়া গেছে। দিগড় ইউপি সচিব জিয়াউর রহমান বলেন, ইউএনও আমাদেরকে মৌখিকভাবে একবার বলেছিলেন। আমরা মৌখিকভাবে প্রকল্পের নাম দিয়েছিলাম। কোনো কমিটি করা হয়নি। এগুলোর কোনো কাজ হয়েছে কিনা, তা আমাদের জানা নেই। জামুরিয়া ও আনেহলা ইউপি সচিব নুরুল হুদা বলেন, এগুলোর কোনো কিছুই হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী একেএম হেদায়েত উল্লাহ বলেন, এটা রাজস্ব খাতের বিষয়। এ সংক্রান্ত আমাদের কাছে কোনো ফাইল নেই। জামুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইখলাখ হোসেন খান শামীম বলেন, আমি সব জানি। এ টাকা দিয়ে কোনো কাজই করা হয়নি। সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। একই কথা বললেন, দিগড় ইউপিথর সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মামুন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি চেয়ারম্যানের ভাষায় ‘এগুলো উপজেলা চেয়ারম্যান তুইলা খায়। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ দুর্নীতির বিষয়গুলো আপনারা একটু দেখেন। এই বিষয়ে ঘাটাইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হায়দার আলী বলেন, প্রকল্পের একটি টাকারও কাজ হয়নি। পুরোটাই আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, দেওপাড়া ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্রে ছাপড়া ঘর মেরামতের কাজ করা হয়েছে। আর কোনো ইউনিয়নে কোনো প্রকল্পে কাজ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর না দিয়ে ইউএনওথর ওপর দায় চাপানো চেষ্টা করেন।
জানতে চাইলে তৎকালীন ইউএনও মোহাম্মদ সোহাগ হোসেন বলেন, নির্বাচনকালীন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য যে প্রকল্প দেয়া হয় তা প্রাক্কলন তৈরি করে উপজেলা প্রকৌশলী। আর প্রকল্পের কাজ হয়েছে কিনা তা তদারকি করার কথা উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইঞ্জিনিয়ারের। এক্ষেত্রে উপজেলা চেয়ারম্যান দায় এড়াতে পারেন না।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: