দিনমজুর সেজে শিশু ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করলো পুলিশ
আদুরীর (ছদ্মনাম) বয়স মাত্র আট বছর। শিশু থেকে কৈশোরে উত্তরণের সুযোগ হয়নি এখনও। গিয়েছিল মামা বাড়ি বেড়াতে। সেখানেই ধর্ষিত হয় অজ্ঞাতনামা আসামির কাছে। তিন মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ, আইসিইউ এবং কেবিনে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কেটেছে সময়। চার ব্যাগ রক্ত লাগে রক্তশূণ্যতা কাটাতে। মামলা দায়ের হলেও কেউ জানেনা সেই অপরাধী ধর্ষকের নাম পরিচয়। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকেও রেহাই পায়নি নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের চৌকস অফিসারের হাত থেকে।
ঘটনা গত বছর ডিসেম্বর মাসের। দ্বিতীয় শ্রেণীর বাৎসরিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আদুরী এসেছিল মামাবাড়ি বেড়াতে। সন্ধ্যায় পাশের দোকান থেকে শুকনা মরিচ কিনতে সমবয়সী মামাতো বোনের সাথে গিয়েছিল মামীর অনুরোধে। সেখানে দেখা হয় এক অপরিচিত মধ্যবয়সী পুরুষের সাথে। সে জিজ্ঞেস করে জনৈক রবিনের (ছদ্দনাম) বাড়ি চিনে কিনা। সাথে থাকা মামাত বোন চিনে বলে জানালে তাদের দু’জনকে বলে বাড়িটি দেখিয়ে দিতে।
তারা পুরুষটিকে সাথে নিয়ে রবিনের বাড়ির সামনে যায়। সেখানে গিয়ে নতুন কৌশলে মামাতো বোনকে বলে তুমি আগে দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখো পূর্ব পাশের ফ্লাটের দরজা খোলা আছে কিনা। সরল সহজ শিশুটি চলে যায় দ্বিতীয় তলায়। এ সুযোগে সেই ব্যক্তি আদুরীকে মুখ চেপে জোর করে পাশের বাড়ির বসত ঘরের পিছনে নির্জন স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফেলে যায়।
রক্তাক্ত আদুরী জ্ঞান হারিয়ে পড়ে থাকে সেখানে। অপরদিকে মামাতো বোন এসে আদুরী এবং অপরিচিত সেই ব্যক্তিকে দেখতে না পেয়ে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনদের জানায়। এরপর খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রক্তাক্ত আদুরীকে পাওয়া যায় অনেকটা জ্ঞানহীন অবস্থায়। দ্রুত নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের সিসিইউ-তে।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় থানায় মামলা হয় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েও ঘটনার রহস্য এবং আসামি সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না। শেষে মামলা চলে আসে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে।
ডিবির চৌকস অফিসার এসআই মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান তদন্তভার গ্রহণ করে বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে সনাক্ত করেন মূল আসামিকে। ছদ্দবেশে দিন মজুরের বেশে কৌশল অবলম্বন করে গতকাল ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ বিকেলে আসামি আঃ খালেক (৩৫), পিতা- মৃত আব্দুস সাত্তার বেপারী, সাং- ইসলামবাগ কালি, থানা- রূপগঞ্জ, জেলা- নারায়ণগঞ্জকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করে ভিকটিম আদুরীকে সে ঘটনার তারিখ ও সময়ে কৌশলে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে রক্তাক্ত করেছিল।
আজ বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) তারিখ বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে খালেক। সম্পূর্ণ ক্লুলেস ধর্ষণ মামলায় আসামি সনাক্ত ও গ্রেপ্তার এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করায় ভিকটিমের পরিবার ও এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছে পুলিশকে। উল্লেখ্য আসামি আঃ খালেক এর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও ধর্ষণ এবং মাদকের একাধিক মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে। ঘটনাস্থলের পাশেই তার শশুর বাড়ি। শশুরবাড়িতে বেড়াতে এসে সে শিশুটিকে ধর্ষণ করে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: