ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের ৩১ তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:০৯ পিএম

মোঃ আবু দারদা লিমন, জাবি প্রতিনিধি: ‘গুলিবিদ্ধ গান একদিন ঠিকই কেড়ে নিবে স্বৈরাচারের প্রাণ’ স্লোগানকে ধারণ করে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংসদের ৩১ তম সম্মেলন। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন ছবি চত্ত্বরে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মজুরি বৃদ্ধির যৌক্তিক আন্দোলনে যুক্ত চা শ্রমিক কৃষ্ণ দাস অলমিক ও সত্যজিৎ ওরাঙ।

সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তাসবিবুল গণি নিলয়ের সঞ্চালনায় চা শ্রমিক কৃষ্ণ দাস অলমিক বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের ফলে চা শ্রমিকদের ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধরিত হয়েছে। আন্দোলনের শুরু থেকে আমাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করার জন্য আমরা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞ। আমাদের ৩০০ টাকা মজুরির দাবী ছিল। কিন্তু আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারিনি। আমরা ভালো রেজাল্টের আশায় ব্যাপারটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে ন্যস্ত করেছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মালিক পক্ষের কথার উপরে আমাদের ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। মন থেকে মেনে নিতে না পরলেও অতি কষ্টে মেনে নিতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, '১৬৮ বছর হলেও আমরা এখনো ভূমির অধিকার পাইনি। জানি না কবে এসব অধিকার ও নাগরিক সুযোগ সুবিধা পাব। রাষ্ট্র যেমন আমাদের মৌলিক অধিকার দেয় না, তেমনি মালিকরাও দিচ্ছে না। কাগজে কলমে মালিকপক্ষ আমাদের শিক্ষা, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিয়ে চুক্তি করলেও বাস্তবে তার কোন বালাই নেই।'

লিখিত বক্তব্যে সম্মেলনের আহ্বায়ক অমর্ত্য রায় বলেন, ‘সারাদেশব্যাপী পুলিশি হামলা-মামলার ভয়ানক চিত্র আমাদের সামনে প্রতিনিয়ত উঠে আসছে। বর্তমানে একটি পুলিশি রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম হয়েছে। আর এই দমন পীড়নের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এসকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে শিক্ষার্থীদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনও নবীনদের জন্য ভয়ভীতি ও র‌্যাগিংমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয়নি। এখনো নির্যাতন-নিপীড়নের বিচার করতে গিয়ে কালক্ষেপণ ও পক্ষপাতদুষ্টতার উদাহরণ আমরা দেখতে পাই। র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসন ঘোষিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি শুধু কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ।’

এসময় তিনি ক্লাসরুম সংকট নিরসন, জাকসুসহ সকল পর্ষদ নিবার্চন ও একাডেমিক মাস্টারপ্লান প্রনয়ণসহ ২৫ দফা দাবি পেশ করেন। সমাপনী বক্তব্যে জাবি সংসদের সভাপতি রাকিবুল হক রনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মৌলবাদীদের উত্থানের পেছনে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা কাজ করছে। ডিজিটাল সিকিউরটি অ্যাক্টের অপব্যবহার করে বাংলাদেশের একজন লেখককে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। শিক্ষক, সাংবাদিক, ছাত্র কেউ তা থেকে মুক্তি পায়নি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজিটাল অ্যাক্টের মত ২০১৮ সালে ৫(ঞ) এবং ৫(খ) নামে দুইটা আইনের ধারা সংযোজন করে তা দিয়ে সাংবাদিকদের ঘায়েল করা হয়েছে। কিছুদিন আগেও জাবিতে কর্মরত সাংবাদিককে নির্যাতন হয়েছে। মূলত বর্তমান সরকার ব্যবস্থার যে নীতি, জাবি তার ব্যতিক্রম নয়।’

উল্লেখ্য, আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় থাকবে বিখ্যাত ব্যান্ডদল কাকতাল ও সহজিয়া।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: