বিশ্ববাজারে সোনার দাম কমলেও যেসব কারণে কমছে না দেশে

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:৩৭ পিএম

বিশ্ববাজারে ক্রমেই কমছে সোনার দাম। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক বাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শনিবার সোনার মূল্য ২৯ ডলার বা ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। প্রতি আউন্স বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৬৪৩ ডলার ৯০ সেন্টে। এটি দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। সবশেষ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এ দামে মূল্যবান ধাতুটি বেচাকেনা হয়। এ নিয়ে টানা ৪ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিশ্ববাজারে সোনার দরপতন ঘটছে। তবে সে অনুযায়ী দেশের বাজারে কমছে না সোনার দাম।

বরং কিছুদিনের ব্যাবধানে বারবার বাড়ছে। সম্প্রতি সোনা ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। যেগুলোর কারণে দেশের বাজারে কমছে না সোনার দাম। তিনি বলেন, দেশের বাজারে সোনার ব্যাপক সংকট রয়েছে। ১৯ প্রতিষ্ঠানকে দামি ধাতুটি আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। প্রথমদিকে কয়েকজন কিছু আমদানি করেছিল। কিন্তু এখন আর কেউ করছে না। কারণ শুল্ক, ভ্যাটসহ আমদানি খরচ অনেক বেড়েছে। এছাড়া বর্তমানে ব্যাগেজ রুলসের আওতায়ও কম সোনা আসছে।

তিনি আরো বলেন, এসব কারণে স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ সোনার দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বিশ্ববাজারে বহু কমলেও দেশে কমানো যাচ্ছে না। সেটার সঙ্গে সঙ্গে এ বাজারের সমন্বয় করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, তেজাবি সোনা আমদানি করা হয় না। এটি দেশেই পাওয়া যায়। এ সোনা একেবারে পাকা। সারাদেশ থেকে পুরোনো সোনা কেনেন রাজধানীর তাঁতীবাজারের ব্যবসায়ীরা। মেশিনে সেগুলোর খাদ বাদ দেয়া হয়। এতে ১০০ শতাংশ খাঁটি সোনা পাওয়া যায়। এতে তেজাবী সোনা বলে। সম্প্রতি সোনার দাম বহু বেড়েছে। বাজুস মূল্য নির্ধারণ ও পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানের মতে, এখন আমদানি নেই, ব্যাগেজ রুলসের আওতায় সোনা কম আসছে এবং তেজাবী সোনার দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে দেশের বাজারে সোনর মূল্য কমানো যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, গত আগস্ট থেকে বিশ্ববাজারে সোনার দর কমছে। গত ১২ আগস্ট প্রতি আউন্স বিক্রি হয় ১ হাজার ৮০১ ডলার ৮২ সেন্ট। সেটা থেকে কমতে কমতে বর্তমানে তা ১ হাজার ৬৫০ ডলারেরর নিচে নেমেছে। এ হিসাবে দেড় মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে প্রতি আউন্সের দাম কমেছে ১৫৮ ডলার। এর মধ্যে শুধু গত সপ্তাহেই হ্রাস পেয়েছে ৩১ ডলার ৬৬ সেন্ট। এদিকে বিশ্ববাজারে নিম্নমুখীতার মধ্যেও দেশের বাজারে সোনার দর বাড়ানো হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর দেশে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে যায়। ঐ সময় সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা বৃদ্ধি পায়। এতে যার মূল্য দাঁড়ায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ টাকা। পরে অবশ্য দুই ধাপে দেশের বাজারে সোনার দাম কমায় বাজুস। সবশেষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২২ ক্যারেটের ভরিপ্রতি দাম ৯৩৩ টাকা কমানো হয়। এতে ভালো মানের সোনার মূল্য দাঁড়ায় ৮২ হাজার ৩৪৮ টাকা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: