শাপলা বিক্রি করে সংসার চলে সালামের

প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৪৬ পিএম

বর্ষা মৌসুম এলে গ্রামগঞ্জের নিচু জমির পানিতে জন্মে বাংলাদেশকে জাতীয় ফুল শাপলা। বর্ষার পানিতে শাপলা ফুটে তৈরি হয় এক অপরূপ দৃশ্যের। ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় সর্বত্রই চোখে পড়ে শাপলা। উপজেলার ডুবে যাওয়া বিভিন্ন ইরি জমি, আমন ধান ও পাট খেতে শাপলা জন্মায়।

এলাকার শাপলা সংগ্রহকারী কৃষকরা ভোর থেকে নৌকা নিয়ে ডুবে যাওয়া জমিতে ও বিলের মধ্যে ঘুরে ঘুরে শাপলা সংগ্রহ করেন। তারপর সেগুলো বাজারে বিক্রি করেন। শাপলা দেশের মানুষের কাছে রান্নার সবজি হিসেবে বেশ জনপ্রিয় একটি খাবার।
শাপলা ভাজি করে ভাতের সাথে দেশ মুখরোচক একটি খাবার।

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শিকারীপাড়া, বারুয়াখালী ও জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে ভ্যানে করে শাপলা বিক্রি করেন মধ্য বয়সী আব্দুস সালাম মিয়া। এই মৌসুম এলে শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। পেশায় দিনমজুর সালাম বর্ষা মৌসুম শেষে বিল থেকে শাপলা সংগ্রহ করে পাড়া মহল্লায় ঘুরে ও বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। সালামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়নের চৌকিঘাটা গ্রামে।

সালামের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুই ছেলে আর দুই মেয়ে নিয়ে ৬ সদস্যের সংসার তাঁর। সংসারের পুরো দায়িত্ব এখন তার কাঁধে। পরিবারের খরচ যোগাড় করতে কৃষি কাজ ছেড়ে বর্ষা এলেই নেমে পড়েন শাপলা বিক্রিতে। কোনো মূলধন ছাড়াই সকাল সন্ধ্যা পরিশ্রম করে দিনে ৪০০-৫০০ টাকা আয় করেন শাপলা বিক্রি করে। বছরের ৩ মাস শাপলা বিক্রির সাথে জড়িত থাকেন। বাকি সময় কৃষি কাজ করেন।

অন্য সময় কৃষিকাজ করা প্রধান জীবিকা হলেও বর্ষা শেষ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শাপলা বিক্রি করে চলে তার জীবিকা। অন্য সময়ের চাইতে একটু বেশি আয় হয় শাপলা বিক্রিতে। এক আটি শাপলা ১০ টাকায় বিক্রি করে দিন শেষে ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা নিয়ে ঘরে ফিরে সালাম মিয়া। এ পেশায় কোনো পুঁজির প্রয়োজন হয় না। তাই বিভিন্ন বয়সের লোক এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।

মৌসুমি শাপলা বিক্রেতা আব্দুস সালাম মিয়া মানবকণ্ঠকে বলেন, ‘প্রতিদিন ভোরে নয়ারহাটের বিল থেকে নৌকা দিয়ে বা বুক পর্যন্ত পানিতে নেমে শাপলা তুলি। পরে সেই শাপলা এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। সব বিক্রি না হলে বিভিন্ন বাজারে গিয়ে বিক্রি করি। প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয় আমার। অন্য সময় কৃষিকাজ ছাড়াও যখন যে কাজ পাই তাই করে জীবন চলাই’।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: