বৈশ্বিক পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে, জিনিস পত্রের দাম আরও বাড়বে

পরিস্থিতি বোধকরি আরও জটিল আকার ধারণ করতে যাচ্ছে। আমাদের এখানকার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- যে কোন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে। ১৮ বছরের এই ইউরোপীয় জীবনে এক দিনের জন্যও কখনো বিদ্যুৎ যেতে দেখেনি। সেই আমাদেরকে এখন বলা হচ্ছে- এই শীতে এমনকি কোন রকম এনার্জি-পাওয়ার ছাড়া আমাদের থাকতে হতে পারে।
আমি ঠিক বুঝতে পারছি না হিটার ছাড়া আমরা চলব কি করে। শহরের তাপমাত্রা এর মাঝেই হিমাংকের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। উইন্টার এখনো আসেনি। তাপমাত্রা যখন মাইনাস ১৫-২০ এ নেমে যাবে। তখন যদি হিটার না থাকে, তাহলে কিভাবে কি হবে আমার ঠিক জানা নেই। আশা করছি এমন কিছু হবে না। এরপরও এই দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- এমন কিছু হবার সম্ভাবনা আছে। এই ঘোষণার পর এই দেশে জেনারেটরের চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছে। মানুষ নাকি শুকনো খাবার পর্যন্ত স্টক করে রাখছে।
আমি এর কিছুই করিনি। আমার মনে আশা- সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু চারদিকে যে পরিস্থিতি দেখছি- যুদ্ধ না আবার তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রুপ নেয়। ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের যে পাইপ লাইন; সেই পাইপ লাইনে গত পরশু দুটো বিস্ফোরণ ঘটেছে। এখন সুইডেন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গুলো বলছে- এটি কোন স্বাভাবিক বিস্ফোরণ নয়। রাশিয়া এই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে থাকতে পারে ইউরোপে এই শীতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার জন্য। এদিকে দখলে নেয়া ইউক্রেনের অঞ্চল গুলোতে রাশিয়া এর মাঝেই গণভোটের আয়োজন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে আজ-কালের মাঝেই হয়ত রাশিয়া এই অঞ্চল গুলোকে তাদের অংশ হিসেবে ঘোষণা করবে।
এরপর কি হয় এটি’ই হচ্ছে এখন দেখার বিষয়। রাশিয়ার অংশ হয়ে যাওয়া মানে হচ্ছে- এই অঞ্চলে যদি ইউক্রেন এরপর কোন হামলা করে, সেটা রাশিয়ার ভূমিতে হামলা হিসেবে বিবেচিত হবে। পশ্চিমা দেশ গুলো বলছে- এই অজুহাতে রাশিয়া পারমাণবিক হামলা চালাতেও পারে। এই সম্ভাবনা নাকি এখন প্রবল হচ্ছে। বড় বড় দেশ গুলো কি করছে এই নিয়ে আমার ভাবনা নেই। আমি ভাবছি বাংলাদেশ নিয়ে।
বৈশ্বিক পরিস্থিতি সত্যিই জটিল আঁকার ধারণ করতে যাচ্ছে। এমনকি আমাদের এখানকার মন্ত্রীরা সতর্ক থাকতে বলছেন। আমার ধারণা জ্বালানীর দাম হয়ত আরেক দফা বাড়বে। সেই সঙ্গে জিনিস পত্রের দামও। কিছু দিন আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন- দুর্ভিক্ষ হলেও হতে পারে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি মানুষকে সতর্ক করেছেন এই বলে। এখন সতর্ক হবার সময়। আমি অর্থনীতি বুঝি না। আমি অর্থনীতির ছাত্র নই। তবে সমাজ বিজ্ঞান তো বুঝি। এই বিষয় নিয়েই তো পড়েছি।
জিনিস পত্রের দাম যদি আরেক দফা বাড়ে, তাহলে সত্যি সত্যি’ই অনেক কিছু সাধারণ মানুষের নাগালে আর থাকবে না। তখন সমাজে বিশৃঙ্খলা অনেক বেড়ে যেতে পারে। এটি সামাল দেয়ার প্রস্তুতি এখনই নিতে হবে। যে করেই হোক খরচ কমান এবং উৎপাদন (খাদ্য এবং জ্বালানী) বাড়ান। মনে রাখবেন- ধনী দেশ গুলোতে জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে। কিন্তু তারা এরপরও খেয়ে বেচে থাকতে পারবে। কিন্তু আমাদের মত দরিদ্র দেশ গুলোর পক্ষে সেটা সম্ভব হবে না। কারন আমরা বেশি দামে জিনিস কিনতে পারব না। ধনী দেশ গুলো এর মাঝেই বেশি দামে তেল-গ্যাস কিনে রাখছে। যার কারনে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। সামনে কি আছে বলা মুশকিল। কিন্তু সতর্ক হতে তো ক্ষতি নেই। তাই সতর্ক হন।
লেখক: ড. আমিনুল ইসলাম।
সিনিয়র লেকচারার ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড ইনোভেশন বিভাগ। এস্তনিয়ান এন্টারপ্রেনারশিপ ইউনিভার্সিটি
না.হাসান/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: