স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্বামীর মামলা, স্বামীকে অস্বীকার করে পাল্টা মামলা স্ত্রীর
স্ত্রীকে ফিরে পেতে কুড়িগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন জয়নাল আবেদীন নামের এক ব্যাক্তি। অপরদিকে স্বামী হিসেবে জয়নাল আবেদীনকে অস্বীকার করে পাল্টা মামলা করেছে নাজমা নামের ওই মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চরভূরঙ্গামারী ইউনিয়নে। তাদের উভয়ের বাড়ি একই এলাকায়।
জানা গেছে, উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের নতুন হাট মুন্সীপাড়া গ্রামের মৃত শুকুর আলীর পূত্র জয়নাল আবেদীন ও ভেল্লীকুড়ি গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের কন্যা নাজমা আক্তারের সাথে গত ২৮-১১-২০১৯ তারিখে পাঁচ লক্ষ টাকা দেন মোহরে রেজিস্ট্রিমূলে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। পরে তারা স্বামী স্ত্রী হিসেবে ঘর সংসার করতে থাকে। স্ত্রীর খুশীর জন্য স্বামী জয়নাল তার স্ত্রী নাজমার নামে সাফ কবলা মুলে যার দলিল নং ৪৯২৫ মূলে ১৬ (ষোল) শতক ও হেবা দলিল যার দলিল নম্বর ২৫৫৮ মূলে ৮ (আট) শতকসহ মোট ২২ (বাইশ) শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়।
পরবর্তীতে স্ত্রী নাজমা তার স্বামীর অনুমতি নিয়ে গত ১৫ মে ২০২১ তারিখে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। স্বামী জয়নাল স্ত্রী নাজমাকে আনতে শ্বশুর বাড়িতে যায়। কিন্তু স্ত্রী নাজমা স্বামীর বাড়িতে ফেরত যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় স্বামীর কাছে আরো ১৬ (ষোল) শতক জমি দাবী করে নাজমা। কিন্তুু জয়নাল স্ত্রীকে বুঝিয়ে ব্যর্থ হয়ে তার বাড়িতে চলে আসে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নাজমা খাতুনের প্রথমে বিয়ে হয় উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের আরাজী পাইকডাঙ্গা গ্রামের মৃত বাছদ্দীনের ছেলে মোকলেছুর রহমানের সাথে। প্রথম স্বামীর মৃত্যু হলে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পশ্চিম নাওডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে ছায়দুল ইসলামের সাথে দ্বিতীয় বিয়েতে আবদ্ধ হন। দ্বিতীর স্বামীকে তালাক দিয়ে চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের শুকুর আলীর ছেলে জয়নাল আবদীনের সাথে ৩য় বিয়েতে আবদ্ধ হন। পরে ৩য় স্বামী জয়নাল আবেদীনের সাথে থাকা অবস্হায় নাগেশ্বরী উপজেলার কেদার ইউনিয়নের টেপারকুঠি গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে এরশাদুলকে স্বামী হিসেবে দাবী করে। পরে এরশাদুল স্ত্রী হিসেবে নাজমাকে অস্বীকার করলে নাজমা নামের ওই মহিলা এরশাদুলকে স্বামী দাবী করে কুড়িগ্রাম জুডিশিয়াল আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে স্বামী দাবী করা এরশাদুল নামের যুবকের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, নাজমা আমার সম্পর্কে খালা হন। তার সাথে আমার কোন বৈবাহিক সম্পর্ক হয়নি। আমি তাকে স্ত্রী অস্বীকার করে কুড়িগ্রাম জুডিশিয়াল আদালতে মামলা করেছি। তা এখন বিচারাধীন অবস্থায় আছে।
নাজমা খাতুনের দ্বিতীয় স্বামী ছায়দুল ইসলাম বলেন, তার স্ত্রী (নাজমা) আমার নিকট থেকে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আমাকে তালাক দিয়ে চলে গেছেন।
এ বিষয়ে জয়নাল আবেদীন বলেন, আমাদের স্বামী স্ত্রীর ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে কয়েকবার শালিশী বৈঠক হয়েছে। উভয় পক্ষের পরিবারের মধ্যে। কিন্তুু কোন সমঝোতা হয়নি। তাই আমি স্ত্রী দাবী করে ও তার সাথে ঘর সংসার করতে ন্যায় বিচার চেয়ে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছি।
এ বিষয়ে নাজমা বেগমের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে, জয়নালের সাথে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন তার সাথে আমার বিয়ে হয়নি এবং বিয়ে সংক্রান্ত যে এফেডেবিট ও নিকাহনামা দাখিল করেছে তা ভূয়া ও অবৈধ। তাই আমি তাকে স্বামী অস্বীকার করে তার (জয়নাল) বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
তবে এ বিষয়ে নাজমা বেগমের মামা আবুল কাশেম ও মামী আরিফা বেগম বলেন, জয়নাল ও আমার ভাগ্নি নাজমার মধ্যে বিয়ে হয়েছে এটা সত্যি। আমরাই তাদের বিয়ে দেয়ার পর তারা স্বামী স্ত্রী হিসেবে আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করত। তাছাড়া তারা প্রায় বছর খানেক জেলা শহর কুড়িগ্রামে বাসা ভাড়া করে একত্রে ছিল। আমরা স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে তাদের ভাড়া বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। এখন সে বিয়ে অস্বীকার করলে তো আমাদের কিছু করার নাই।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: