জুড়ীতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করল উপজেলা ছাত্রলীগ

সদ্য মনোনীত হওয়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপ তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ব্যানার্জীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে নিজ উপজেলা জুড়ী ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে সাংবাদিকদের নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন সাবেল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভুইয়া উজ্জ্বল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শাহাব উদ্দিন সাবেল ও ইকবাল ভুইয়া উজ্জ্বল লিখিত বক্তব্য পেশ করে বলেন, ডুয়েট ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক বিনয় ব্যানার্জী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মনোনীত হয়ে নিজ উপজেলা জুড়ীতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর আগমন উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর গঠনতন্ত্র অমান্য করে স্থায়ী বহিষ্কৃত ছাত্রনেতার সংবর্ধনা গ্রহন নিয়ে আমাদের সংবাদ সম্মেলন।
তিনি বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর, রবিবার আমাদের জুড়ীর আওয়ামী রাজনীতির অঙ্গনে এক অনাকাঙ্খিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান লক্ষ্য করি। উল্লেখ্য ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগ এর সভাপতি আমিরুল হোসেন চৌধুরী আমিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম এর স্বাক্ষরিত প্যাডে জুড়ী উপজেলার ১৬ সদস্য বিশিষ্ট্য (কমিটির পুরো নাম) ও তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজ শাখার ১৪ সদস্য বিশিষ্ট্য কমিটি (কমিটির পুরো নাম) অনুমোদন করা হয়। তার পরে ১৫ নভেম্বর ২০১৯ সালে উক্ত কলেজ ও উপজেলার ৩১ সদস্যের তথা উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় উক্ত কমিটি স্থগিত করে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ এর সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের স্বাক্ষরিত প্যাডে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (প্যাডে পড়ে শুনানো) শাকিল ভূঁইয়া ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু কে সদস্য করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ সহ প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
উক্ত তদন্ত কমিটি জুড়ীতে স্বশরীরে এসে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন এবং প্রশাসনের লিখিত বক্তব্য নেন। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে উক্ত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এআর সাজেদ (সভাপতি, টি.এন খানম সরকারি কলেজ শাখা) কে বিভিন্ন অপকর্মের দায়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয় এবং উক্ত কলেজ ও উপজেলা শাখা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন (প্যাড পড়ে শুনানো)।
অত:পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠিত দুই সদস্য বিশিষ্ট্য তদন্ত কমিটির সুপারিশের নিরিখে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ ও মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগ এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৩ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে কমিটির সভাপতি ফয়ছল আহমদ কে জেলা ছাত্রলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত করা হয়।
পরে ৭ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে শাহাব উদ্দিন সাবেলকে সভাপতি এবং ইকবাল ভূঁইয়া উজ্জ্বলকে সাধারণ সম্পাদক করে ২ সদস্য বিশিষ্ট্য জুড়ী উপজেলা শাখার নতুন কমিটি এবং আদনান আশফাক কে সভাপতি ও গৌতম দাশকে সাধারণ সম্পাদক করে টি.এন.খানম সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগ। এ কমিটি এখনো চলমান রয়েছে।
শাহাব উদ্দিন সাবেল আরও বলেন, ডুয়েট ছাত্রলীগ এর সাধারণ সম্পাদক বিনয় ব্যানার্জী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপ তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মনোনীত হওয়ার পর আমাদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন। বলেন “আমি জুড়ীতে আসলে তোমাদের সাথে যোগাযোগ করে আসব” কিন্তু তিনি জুড়ীতে আসার আগে আমাদের সাথে কোন রকম যোগাযোগ করেননি।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ খ্রি. তারিখ রোজ রবিবার জুড়ীতে আগমন উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর গঠনতন্ত্র অমান্য করে স্থায়ী বহিষ্কৃত ছাত্রনেতার সংবর্ধনা গ্রহণ করে জুড়ী উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগ এবং জুড়ী আওয়ামী পরিবারের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন। জানাব বিনয় ব্যানার্জীর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রমের জন্য আমরা জুড়ী উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগ তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং উনাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে এ আর সাজেদ বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছাত্রলীগের একজন কর্মী। আমি সব সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ ঘরানার বিভিন্ন জাতীয় ও দলীয় সভা সমাবেশ মিছিল-মিটিং এবং পরিবেশমন্ত্রী মহোদয়ের অনুষ্ঠানে ও অংগ্রহণ করে আসছি। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একটি রেস্টুরেন্টে আমার বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করে কেন মিথ্যাচার করছেন তাহা আমার বোধগম্য নয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপ তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ব্যানার্জী বলেন, আমি এলাকায় আসার পূর্বে মাননীয় পরিবেশমন্ত্রী, উপজেলা আওয়ামীলীগ, সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস.এম জাকির হোসাইন ভাই, জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ, উপজেলা ছাত্রলীগ সহ সবাইকে জানিয়েছি। কিন্তু উপজেলা ছাত্রলীগ উপস্থিত না থেকে এখন কেন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন তা আমি অবগত নই। অথচ আমার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস.এম জাকির হোসাইন ভাই, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিল। তাদের মিথ্যাচারের বিষয়টি আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অভিভাবকদের জ্ঞাত করব।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন সাবেল, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূঁইয়া উজ্জ্বল, টি.এন খানম সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আদনান আশফাক ও সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাশ।
শাকিল/সাএ
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: