সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে চার গ্রাম, মানুষ পারাপারে নৌকাই ভরসা

প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর ২০২২, ১১:৪০ এএম

রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার ৪নং বগাচতর ইউনিয়নে একটি সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে পড়েছে চার গ্রামের মানুষ। চার গ্রামের মাঝখানে বয়ে গেছে কাপ্তাই হ্রদ। কাপ্তাই হ্রদের এপারে-ওপারে রয়েছে বাজার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কোনো সেতু না থাকায় গ্রামবাসীদের একমাত্র যাতায়াতের ভরসা নৌকা। প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সহ হাজারো মানুষের। সেতুর অভাবে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের। বর্ষা মৌসুমে এই দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এই অবস্থায় দ্রুত সেতু নিমার্ণের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

সরেজমিনে ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লংগদু উপজেলার ৪নং বগাচতর ইউনিয়নের মুসলিম ব্লক, অফিসটিলা, ফজলে শিবির এবং পেডানিমাছড়া এই চার গ্রামে প্রায় ২ হাজার মানুষের বসবাস। এই চার গ্রামের এপারে-ওপারে রয়েছে একটি বাজার, নুরানী মাদ্রাসা এবং উগলছড়ি মহাজনপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় সহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কোনো ব্রীজ না থাকায় তাদের পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা। প্রতিদিন স্কুল এবং মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হ্রদ পারাপার হয়। অনেক সময় নৌকা ডুবে দুর্ঘটনার শিকারও হন তারা। বছর খানেক আগে নৌকা ডুবে দুইজন শিক্ষার্থীও মারা গেছে বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসী।

উগলছড়ি মহাজন পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম ও ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও আনিকা আক্তার জানান, প্রতিদিনই নৌকা করে তাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে তাদের ভয় এবং অসুবিধা হয়। একটি ব্রীজ নিমার্ণ করলে তাদের এই ভয় কেটে যাবে এবং বিদ্যালয়ে যাতায়াতের সুবিধা হবে।

একই বিদ্যালয়ের ১০শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোঃ সাইফুল জানান, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকা দিয়ে হ্রদ পারাপার হতে হয়। অনেক সময় নৌকাও ডুবে যায়। বছর খানেক আগে নৌকা ডুবে যাওয়ায় তাঁরা তাদের দু’জন সহপাঠীকে হারান। এমতাবস্থায় একটি ব্রীজ নিমার্ণ করা হলে তাদের ভালো হবে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা জানান, ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ভয়ে বা আতঙ্কে থাকতে হয়। কেন না প্রতিনিয়ত নৌকা ডুবে যায়। নৌকা ডুবে যাওয়ার কারণে বছর খানেক আগে দুই ছাত্রী মারা গেছে।

৪নং বগাচতর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং উগলছড়ি মহাজন পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মোঃ আবুল বশর জানান, শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনই নৌকায় করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। এতে তাদের যাতায়াতের অসুবিধা হয়। বছর খানেক আগেও দুইজন ছাত্রী নৌকা ডুবে মারা গেছে। ব্রীজ নিমার্ণ হলে এমন দুর্ঘটনা আর হবে না। তাই তিনি এখানকার এলাকাবাসী এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথ সুগম করতে পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে ব্রীজ নিমার্ণের দাবি জানান।

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী জানান, বগাচতর ইউনিয়ন থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন উপজেলায় রাস্তা এবং ব্রীজের সমস্যা আরও বিদ্যমান। বগাচতর ইউনিয়নের পাশাপাশি পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির বিভিন্ন অঞ্চলে এরকম সমস্যা রয়েছে গেছে। জেলা পরিষদ প্রতিনিয়ত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে প্রধান্য দিয়ে থাকে। তিনি আরো জানান, বগাচতর ইউনিয়নের দিকে তাঁর বিশেষ সুদৃষ্টি থাকবে এবং সামনে প্রকল্প গ্রহণ করলে বগাচতর ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত এবং তাদের সমস্যা সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: