কন্যাশিশুর সম্ভ্রমের মূল্য লাখ টাকা গেলো ছাত্রলীগ নেতার পকেটে

প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০২২, ০৭:০০ পিএম

ফতুল্লার কুতুবপুরে দেলপাড়ায় শিশু ধর্ষণচেষ্টা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাসেল মোল্লা নামের এক তথাকথিত ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। সালমা (ছদ্মনাম) নামের সাত বছরের কন্যা শিশুকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক সালমান ধর্ষণের চেষ্টা চালান। কিন্তু বড় অঙ্কের নগদ টাকার বিনিময়ে তা ধামাচাপা দেন নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দেওয়া রাসেল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। গত ৪ অক্টোবর মঙ্গলবার পিলকুনী পুলপার ঢেউয়াতলা এলাকায় তাহফিজুল কুরআন মাদ্রাসায় ওই ঘটনা ঘটলেও গতকাল বুধবার রাত থেকে তা আলোচনায় আসে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনায় বিরাজ করছে।

শিশুটির পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, তাফসীরুল কোরআন মাদ্রাসার ছাত্রী সালমা মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসায় গেলে মাদ্রাসার শিক্ষক সালমান তাকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এসময় শিশুটি দৌড়ে বাসায় চলে যায়। পরে বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানালে বিষয়টি জানাজানি হয়।

পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়ে বহুল বিতর্কিত রাসেল ও তার বাহিনী। সুমন নামে আরো এক ব্যক্তিও যোগ দেয় তাদের সাথে। এলাকাবাসীর বাধার মুখেও তথাকথিত বিচার সালিশের মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়া হয় শিশু ধর্ষণ চেষ্টার মতো ঘটনা৷ বিনিময়ে লক্ষাধিক টাকা পেয়েছেন রাসেল মোল্লা, এমনটিই জানান এলাকাবাসী৷

এ বিষয়ে স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, 'শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার কথা জেনে আমরা দেলপাড়া ঢেউয়াতলা যাই৷ কিন্তু তথাকথিত ছাত্রলীগ নেতা রাসেল মোল্লা আমাদেরকে 'কিছুক্ষণ পরে আসছি' বলে বসিয়ে রেখে সেখান থেকে একপ্রকার পালিয়ে যান৷ এরকম একটি স্পর্শকাতর ঘটনার মীমাংসা কোনোভাবেই তিনি করতে পারেন না৷'

এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ বিশাল একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা মাদ্রাসার শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা খেয়ে ছাত্রলীগ নেতা রাসেল মোল্লা ও একই এলাকার সুমন এ ঘটনাটিকে বিচারের মাধ্যমে ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছে। এতে করে একটি শিশু বাচ্চাকে ধর্ষণের চেষ্টার অপরাধ থেকে মাদ্রাসার শিক্ষক সালমান বেঁচে গেল। আমরা যতটুকু জানি শিশু নির্যাতন কখনো বিচারের মাধ্যমে সমাধান করা যায় না। কিন্তু তারা টাকা খেয়ে বিচারের মাধ্যমে এ ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিয়ে দিল।

মাদ্রাসার ছাত্রীর বাবা বলেন, আমার সাত বছরের মেয়ে ওই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। প্রতিদিনের মতো সেদিন পড়তে গেলে সালমান আমার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমার মেয়ে অনেক কষ্টে দৌড়ে বাসায় চলে আসে। পরে বিষয়টি সে আমাদেরকে জানালে ঘটনাটি এলাকার মুরুব্বীদের জানাই। কিন্তু তথাকথিত ছাত্রলীগ নেতা রাসেল মোল্লা ও একই এলাকার সুমন বিষয়টির মীমাংসা করে।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা রাসেল মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক শিশুটিকে আদর করার চেষ্টা করেছিলো৷ আমিরা বিষয়টিকে মীমাংসা করে দিয়েছি।

এ বিষয়ে মডেল থানার ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, এ বিষয়টি আমরা অবগত নই, কেউ আমাদেরকে জানায়নি। খোঁজখবর নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: