পঞ্চগড়ে ডিসির নাম্বর ক্লোন করে অর্থ দাবী

পঞ্চগড়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে অর্থ দাবী করা হয়েছে। চলমান জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করা হয়েছে। ফোনে নির্বাচনের প্রার্থী এবং ভোটারদের ফোন করে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার নামে অর্থ দাবি করা হয়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও ঘটনার শিকার একাধিক ব্যাক্তি জানান, শনিবার সকাল ১১ টা এক মিনিটে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তি প্রথমে জেলা পরিষদ নির্বাচনের আটোয়ারী উপজেলার সদস্য প্রার্থী মো. মাজেদুর রহমান বুকুলকে ফোন করেন। ফোনে সেই ব্যক্তি নিজেকে পঞ্চগড়ের ডিসি পরিচয় দেন এবং নাম্বারটি তার ব্যক্তিগত বলে জানান। পরে মাজেদুর রহমান প্রশ্ন করলে তিনি পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের সরকারি নাম্বার ক্লোন করে সেই নাম্বার দিয়ে ফোন করে তার পূর্বের কথিত ব্যক্তিগত (পারসোনাল) নাম্বারে কল ব্যাক করতে বলেন। সদস্য প্রার্থী মাজেদুর কল ব্যাক করলে তাকে ফোনে বলেন, আমি বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে আপনার ভোটের বিষয়ে হেল্প করতে চাই। এর বিনিময়ে তিনি বিকাশ এর মাধ্যমে টাকা দাবি করেন।
একইভাবে তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলনকেও ফোন করে তার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেন। এ সময় তিনি (প্রতারক) সেই নাম্বারে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বলেন। জেলা প্রশাসকের নামে মোবাইলের মাধ্যমে অর্থ চাওয়ার বিষয়টি সন্দেহ হলে তারা তাৎক্ষণিক বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের জানান। একই সাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের ব্যাক্তিগত সহকারি মো. আলতাফ পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এবং সামাজিক মাধ্যমে সতর্কতামুলক প্রচারণা চালানো হয়।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের সদস্য প্রার্থী মো. মাজেদুর রহমান বকুল বলেন, সকাল ঠিক ১১ টা এক মিনিটে ফোন করে আমাকে পঞ্চগড়ের ডিসি হিসেবে পরিচয় দেন। ডিসি স্যারের সরকারি নাম্বর আমার সেইভ আছে জানালে তিনি ডিসি স্যারের সেই সরকারি নাম্বার দিয়েই ফোন করেন এবং পুর্বের নাম্বারে কল ব্যাক করতে বলেন। আমি কল ব্যাক করলে তিনি আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলেন এবং আমাকে সেই ইউনিয়ন পরিষদের ভোটারদের কাছ থেকে ভোট নিতে সহায়তার কথা বলেন। একই সাথে আমার কাছে বিকাশের মাধ্যমে টাকা চাওয়া হয়।
তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন বলেন, সকালে অজ্ঞাত একজন আমাকে ফোন করে আমার এক প্রার্থীকে নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেন। এর বিনিময়ে তিনি (প্রতারক) বিকাশের মাধ্যমে টাকাও পাঠাতে বলেন। আমি শুরু থেকেই তার প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারি। বিষয়টি তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ সংশ্লিষ্টদের জানাই।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নাম্বার ক্লোন করে চলমান জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রভাব বিস্তারসহ অর্থ চাওয়ার ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা প্রতারকের নাম্বারসহ বিভিন্ন দিক গুরুত্বের সাথে তদন্ত শুরু করেছি। আশা করি দ্রুত প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনা হবে।
জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আজাদ জাহান বলেন, কোন একটি অসাধু চক্র জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সরকারি মোবাইল ফোন নাম্বার ক্লোন করে বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, পৌর কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অর্থ এবং ভোট চাওয়ার মত অবৈধ প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মাঝে সতর্কতামুলক প্রচারণাসহ থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: