ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামে গ্রামে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহি ধামের গান

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২২, ১০:০৩ পিএম

হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয়া দূর্গা পুজার তিনদিন পর অনুষ্ঠিত হয় লক্ষ্মী পুজা। আর লক্ষী পুজার পরের দিন থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামের মন্দিরগুলোতে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহি ধামের গান। আর গ্রামগুলোতে এ ঐতিহ্যবাহি ধামের গান সকল বয়সীদের বিনোদনের রসদ জোগায়। কেননা এ গানে পুরুষেরা নারী সেজে তাদের নাটকের চরিত্র সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলে।

প্রথম দেখায় কেউ বুঝতে পারবে না নারী বেশে অভিনয় করা মানুষটি আসলে পুরুষ না নারী! গ্রাম্য ভাষায় এসব নারী সেজে বিনোদন প্রদানকারিদের ডাকা হয় ‘ছুকরী’ হিসেবে। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের কাশিডাঙ্গা লক্ষীর ধামে আয়োজন করা হয় ‘ধামের গানের আসর’।

মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নারী-শিশু, কিশোর-যুবক ও বয়বৃদ্ধরা ধামের গানের আসরের চারদিকে মনযোগ দিয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা থেকে আগত আর.এফ.এল যুব সংগঠন দলের পরিবেশিত “বিজয় বসন্ত” নামক যাত্রাপালাটি উপভোগ করছে। আর ধামের আসরের চারপাশে বসেছে মেলা-এ যেনো এক অন্যরকম পরিবেশ।

কথা হয় যাত্রাদলের পরিচালক নারদ রায়ের সাথে, তিনি জানান, প্রতি বছরই তার দল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে ধামের গানের আসর পরিচালনা করে।তার দলে রয়েছে মোট ২৫জন সদস্য।নাটকের চরিত্র ভেদে এদের মধ্য থেকে কেউ নারীর পোশাকে যাত্রায় অভিনয় করে।তিনি জানান, তারা চুক্তিতে নাটক পরিবেশন করেন এবং নাটক পরিবেশনের উপর ভিত্তি করে ৭-১০ হাজার টাকা করে পান একেকটি ধামের আসর থেকে।

ধামের গান দেখতে আসা সীতা রায় ও উর্মি রায় জানান, প্রতি বছর তারা এ ধামের গান বেশ উপভোগ করেন। বিশেষ করে রাত জেগে ধামের গান শোনার অনূভূতিগুলো বেশ হৃদয়স্পর্শী হয় বলে জানান তারা।

কাশিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা রবীন্দ্র নাথ রায় ও অদ্বৈত চন্দ্র মন্ডল জানান, প্রায় ৭০ বছর ধরে সেখানে ধামের গান হয়ে আসছে। এ আসরকে ঘিরে এলাকায় ৪-৫দিন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।

কাশিডাঙ্গা ধামের গান আয়োজক কমিটির সভাপতি মহাদেব চন্দ্র মন্ডল জানান, ধামের গানের আসর আমাদের পূর্বপুরুষদের আমল থেকে হয়ে আসছে। মুলত; লক্ষ্মী পুজার পরের দিন থেকে এ আসর বসে। এবার সোমবার রাত হতে শুরু হয়েছে চলবে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত। আসরে এবার ১২-১৫টি দল অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: