আমের রাজধানীতে বারোমাসি তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাবু আলী

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৩৬ পিএম

আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বারোমাসি তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়েছেন কৃষকরা। এই তরমুজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। চাষিরা বলছেন এক জমিতে বছরে ৪ বারেরও বেশি চাষ করা সম্ভব এ তরমুজ। আর স্থানীয় কৃষি বিভাগের ধারণা জেলার বাণিজ্যিক নতুন সম্ভাবনার নতুন বার্তা বয়ে আনবে এই বারোমাসি তরমুজ।

সোমবার (১০ অক্টোবর) সকালে জেলার সদর উপজেলার আমনুরা রোডের জামতলা বাজার এলাকার বাবু আলীর 'আমিরা এগ্রো ফার্মে' গিয়ে দেখা গেছে, মাটিতে মালচিং পেপারের নিচে রোপণ করা বীজ থেকে চারা উঠে দুপাশে দেওয়া বাঁশের তৈরি মাচার ওপর বড় হয়েছে গাছ। গাছে দুলছে ব্ল্যাক বেবি ও কানিয়া জাতের সুস্বাদু তরমুজ। আর ছিঁড়ে না পড়ে এজন্য ব্যবহার করা হয়েছে এক ধরনের নেটের ব্যাগ। এক একটি তরমুজের ওজন প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি পর্যন্ত। যা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে।

কথা হয় তরমুজ চাষি বাবু আলীর সাথে। তিনি জানান, গত তিনমাস আগে স্থানীয় কৃষি বিভাগ ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজের ১২ কাঠা জমির একটি প্রদর্শনী দিয়েছিল। এ জন্য চাষ করেছিলাম এই বারোমাসি তরমুজ। কিন্তু বীজ রোপণের দুই মাসের মধ্যেই সব তরমুজ সুমিষ্ট হয়ে বিক্রির উপযোগী হয়েছিল। পরে ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে প্রায় ৯৫ হাজার টাকা পেয়েছি। এটা খুব লাভজনক ফল। তাই ফের ১৫ কাঠা জমিতে চাষ করেছি। এবার প্রায় ১ লাখ টাকা পাব বলে আশা করছি। আগামী বছর প্রায় ১০ বিঘা জমিতে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কামরুল হাসান নামে আরও এক তরমুজ চাষি বলেন, মাত্র ৬০ দিনে কানিয়া তরমুজ বিক্রির উপযোগী হচ্ছে। এতে আমরা বেশ লাভবান হচ্ছি। অন্যান্য বছর যে তরমুজগুলো চাষ করতাম। বছরে মাত্র একবার চাষ করা যেত। আমার জমিতে এখন সারাবছর তরমুজ পাওয়া যায়। এবছর ৪ মাসে দু'বার এ তরমুজ চাষ করে ১৫ কাঠা জমিতে প্রায় দুই লাখ টাকা পেয়েছি। আর খরচ হয়েছে মাত্র ৬০ হাজার টাকা।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকারের সাথে। তিনি মোবাইল ফোনে জানান, গত ৫ মাস আগে একটি প্রকল্পের আওতায় ব্ল্যক বেবি ও কানিয়া জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ করছেন কৃষকরা। এ তরমুজ চাষ করে ৬০ দিনে ১ বিঘাতে প্রায় দেড় লাখ টাকা আয় করেছে অনেকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জেলায় খুব বেশি জমিতে চাষ হয়নি এ বারোমসি তরমুজ। তবে আশা করছি আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে পুরো জেলাতেই চাষ হবে এ তরমুজ। যেহুতু অসময়ে পাওয়া যাচ্ছে এই তরমুজ। তাই দামও বেশ ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। এতে জেলার অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে এই বারোমাসি তরমুজ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: