গণভবনে যেতে ২৩৩ কিমি হাঁটা শুরু প্রতিবন্ধী শিক্ষক জাহিদুলের

পিরোজপুরের ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম। অন্যসব শিক্ষকের মতো তিনিও চান তার বিদ্যালয় এমপিওভুক্তি হোক। আর এ দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার আশায় ইন্দুরকানী থেকে ঢাকার পথে পদযাত্রা শুরু করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় থেকে হেঁটে ঢাকার গণভবনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন জাহিদুল ইসলাম।
অন্য সব শিক্ষকদের থেকে অনেক আলাদা জাহিদুল। তার একটি পা অচল ও এক চোখ আলোহীন। হাতদুটিও প্রায় অচল। তার বৃদ্ধ বাবা শাহজাহান মোল্লা একজন মানসিক রোগী। মাও নানা রোগে আক্রান্ত। বাবা, মা, স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটছে তার। বাধ্য হয়ে বিনাবেতনে চাকরির পাশাপাশি একটি চায়ের দোকান খুলে বসেছেন জাহিদুল ইসলাম। প্রতিবন্ধী শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছি। প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাজীবন কতটা কষ্টের হয় তা আমি জানি। তাই ২০১৮ সালে ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি আমরা প্রতিষ্ঠা করি। সরকারের সবধরনের নীতিমালা মেনে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণায়লয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হয়। স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বিদ্যালয়টির প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য একাধিকবার ডিও লেটার দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ে। তারপরও কোনো কাজ হয়নি।
তিনি আরও জানান , আমরা ২১ জন শিক্ষক-কর্মচারী বিনাবেতনে ১৫৩ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাই। তাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে অর্থ সংকটে বিদ্যালয়টি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। আমরা শিক্ষক-কর্মচারীরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছি। সরকারিভাবে কোনোধরনের সহায়তাও দেওয়া হয় না। তাই ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সহ এ ধরনের সব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় যাতে অনতিবিলম্বে স্বীকৃতি পায় এবং এমপিওভুক্ত করা হয় সে দাবি নিয়ে আমি ২৩৩ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই। তার দেখা পেলে আশা করি তিনি আমাকে খালি হাতে ফেরাবেন না।
ইন্দুরকানী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক আহাদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে নিয়মিত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পাঠদান চলছে। তবে বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনভাতা ও বিদ্যালয়ের সার্বিক খরচ মেটাতে পারছি না। বিদ্যালয়টি প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেলে ১৫৩ জন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, আমাদের মতোই সারাদেশে কয়েক শতাধিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা কোনো ধরনের বেতনভাতা পাচ্ছেন না। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি বিদ্যালয়গুলো যাতে দ্রুত এমপিওভুক্ত করা হয়।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মন্তব্য: