জনবল সংকটে ভোগছে সুনামগঞ্জ জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগার

প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০২২, ১০:০৮ এএম

পড়লে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই এই শ্লোগান কে সামনে রেখে সবাইকে অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে কাজ করছে সুনামগঞ্জ জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগার। ১৯৮৩ সালে সরকারিকরণের মাধ্যমে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সুনামগঞ্জ জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগারটি।

জনবল সংকটের কারনে সরকারী সময় মেনে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্তরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে বর্তমানে দাঁয়িত্বে থাকা একজন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ানকে। যেখানে বিভিন্ন পদে আট জন কর্মরত থাকার কথা সেখানে একজন জুনিয়র গ্রন্থাগার ও একজন নাইট গার্ড দিয়ে চলছে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানটি।

সুনামগঞ্জ জেলা সরকারী গণগ্রন্থাগারটি জেলার পৌর শহরের হোসেন বখত চত্বর সংলগ্ন স্থানে স্থাপিত। গত ১৯৫৪ তথ্য কেন্দ্র নামে ঢাকায় চালু হয় তারই অংশ শাখা হিসেবে ভাড়া করা ভবনে কার্যক্রম চালু ছিল সুনামগঞ্জেও। এরপর গত ২০১১সালে নিজস্ব ভবনে বর্তমানের এই ভবনটি চালু আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে গণগ্রন্থাগার প্রায় পাঠক শুন্য ছিল। তবে করোনার সময়ও সীমিত আকারে নিদিষ্ট দুরত্ব বজায় রেকে ও মাক্স পরে কিছু পাঠক আসত। এখন পাঠক সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু জনবল বাড়ছে না। দীর্ঘদিন ধরে ৮টি পদের মধ্যে লাইব্রেরিয়ান, ক্যাটালগার, লাইব্রেরি এ্যাসিসটেন্ট, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, বুক সর্টার, অফিস সহায়ক মোট ৬টি পদ শূন্য রয়েছে। তব বর্তমানে কর্মরত ২ জন রয়েছেন তার মধ্যে একজন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান অপরজন নিরাপত্তা প্রহরী। লাইব্রেরি এ্যাসিসটেন্ট পদ ছাড়া বাকি সব পদগুলোতে কখনোই পদায়ন হয়নি।

লাইব্রেরিতে বর্তমানে গল্প,উপ্যনাসসহ বিভিন্ন ধরনের তিশ হাজারের অধিক বই রয়েছে। ভ্রামমান গাড়িতে(লাইব্রেরিতে)জন্য দুজন প্রতিদিন জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে পাঠকদের চাহিদা মিঠাচ্ছে। শহরের মধ্যে এইছ এমপি উচ্চ বিদ্যালয়,সরকারী এসসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,শহর বালিকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,জুবলী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়,সৃজন বিদ্যাপিঠ,ডেফোডিল আর্দশ বিদ্যালয়,সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজ,সরকারী মহিলা কলেজ,সরকারী এসসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,সুনামগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়,বুলচাঁন স্কুল এন্ড কলেজ,নবজান উচ্চ বিদ্যালয়,দীনিসিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা,তেগরি হরমজিয়া কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনে প্রতিদিন লাইব্রেরিতে আসছে এতে করে প্রতিদিন তিন থেকে চার শত ছাত্র-ছাত্রী ও বই প্রেমীরা আসছেন।

এছাড়া শিশুদের জন্য বিশেষ বই,প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বই সহ খেলনা,বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার আছে সেখানেও নিয়মিত শিক্ষার্থীরা বই পরছেন। সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজ ইন্টার প্রথম বর্ষের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থী নাজমুন নুর শ্রেষ্ঠ জানান,সরকারী গণগ্রন্থাগারের সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে জনবল নিয়োগ করা খুবেই প্রয়োজন। জনবল না থাকায় বই বিষয়ে নানান জঠিলতায় পড়তে হয়। কারন একজন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ চাহিদা ঘাটতি পুরন হচ্ছে না।

সুনামগঞ্জ পৌর কলেজের ইন্টার প্রথম বর্ষের শিক্ষা মাহফুজুর রহমান রুহিত বলেন,আমি প্রতিদিন গনগ্রন্ত্রাগারে যাই। নিজের পছন্দের ও প্রয়োজনী বই পাই এবং পড়ি ভাল লাগে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ের বই সংযোজন করলে ভাল হয়। সেই সাথে গণগ্রন্থাগারটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদের সংকট রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। একজন জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান আমাদের সবার চাহিদা মেটাতে পারছেন না। এর সমাধান করা হলে এখানে আগত সবাই উপকৃত হবে।

জুনিয়র গ্রন্থাগার আনিসুর রহমান জানান, আলোকিত সমাজ বিনির্মানের প্রচেষ্টায় পাঠকদের পুস্তক পাঠদানের মাধ্যমে সেবা প্রদানে বদ্ধপরিকর জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার কিন্তু জনবল সংকটের কারনে রীতিমতো আমি হিমসিম খাচ্ছি। আমাকে একাই সকল দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বার বার উধর্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,সুনামগঞ্জ জেলা গণগ্রন্থাগারটিতে জনবল সংকটের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: