পরপুরুষের সঙ্গে মত্ত স্ত্রীর ভিডিও করে গ্রেফতার স্বামী
ফাঁদে ফেলে প্রভাবশালীদের ব্ল্যাকমেল করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতাতেন ওড়িশার ‘সিরিয়াল ব্ল্যাকমেলার’ অর্চনা নাগ। গত কয়েক দিন ধরে ওড়িয়া রাজনীতিতে যে নামটি ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় এ বার গ্রেফতার করা হল অর্চনার স্বামী জগবন্ধু চাঁদকে। শুক্রবার জগবন্ধুকে ভুবনেশ্বরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আদালতের নির্দেশে আপাতত জেলবন্দি জগবন্ধু।
অর্চনার স্বামীর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে ভুবনেশ্বরের ডেপুটি কমিশনার প্রতীক সিংহ জানিয়েছেন যে, এই প্রতারণার কারবারে অর্চনার পাশাপাশি জড়িত জগবন্ধুও। এই চক্রে আর যাঁরা যাঁরা জড়িত থাকবেন, তাঁদের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত ৬ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়েছিল অর্চনাকে। তখনই এই চক্রে তাঁর স্বামীর যোগসূত্র পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু তার পরও জগবন্ধুকে গ্রেফতার করতে এতটা সময় কেন লাগল, এই প্রশ্ন উঠেছিল। এ ব্যাপারে ডেপুটি কমিশনার বলেন, ‘‘তদন্তে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ আমরা খতিয়ে দেখেছি। সে সব খতিয়ে দেখার পরই ওঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ গ্রেফতারের পর ওড়িশার ঝড়পাড়া স্পেশাল জেলে রাখা হয়েছে অর্চনাকে। ওই একই জেলে রাখা হয়েছে তাঁর স্বামী জগবন্ধুকেও। দরিদ্র পরিবারে বড় হওয়া অর্চনা কী ভাবে রাতারাতি বিত্তশালী হলেন, তার তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারীদের। কালাহান্ডির একটি প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে ছিলেন অর্চনা। কী ভাবে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা উপার্জন করা যায়, এই পথই খুঁজছিলেন অর্চনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, সহজে বেশি টাকা উপার্জনের রাস্তা খুঁজতে গিয়েই বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের যৌনতার ফাঁদে ফেলে তাঁদের ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতানোর ছক কষেন অর্চনা। আর এই কারবারে সঙ্গে পান স্বামী জগবন্ধুকেও। তেন অর্চনা। তার পর তাঁদের বাড়িতে ডেকে এনে মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ করে দিতেন। এমনকি, ওই ব্যক্তিদের চাহিদা মতো মহিলাও সরবরাহ করতেন বলে অর্চনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। বেছে বেছে ধনী, প্রভাবশালীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেন অর্চনা। তার পর তাঁদের বাড়িতে ডেকে এনে মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ করে দিতেন। এমনকি, ওই ব্যক্তিদের চাহিদা মতো মহিলাও সরবরাহ করতেন বলে অর্চনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। টাকা রোজগারের জন্য নিজেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতেন অর্চনা। তাঁদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কেও লিপ্ত হতেন তিনি। এমনটাই দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে যখন ঘনিষ্ঠ অবস্থায় থাকতেন অর্চনা, সেই ছবি ও ভিডিও তুলতেন তাঁর স্বামী জগবন্ধু। পরে সেই ছবি ও ভিডিও দেখিয়েই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতাতেন। এর জেরেই অর্চনার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। ওড়িশার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, অর্চনার ফাঁদে পা দিয়েছেন সে রাজ্যের একাধিক রাজনীতিক। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জন মন্ত্রী ও বিধায়কও রয়েছেন। অভিযোগ, অধিকাংশ রাজনীতিকই সে রাজ্যের শাসকদল বিজেডির।
পুলিশ সূত্রে খবর,অতিরিক্ত টাকা উপার্জনের নেশায় মত্ত হয়ে থাকতেন অর্চনা ও তাঁর স্বামী। উদ্দেশ্য ছিল এই কারবার করে টাকা রোজগার করা। সেই উদ্দেশ্যে সফলও হয়েছিলেন অর্চনা ও তাঁর স্বামী জগবন্ধু। দরিদ্র পরিবারের মেয়ের জীবনধারা রাতারাতি বদলেছে। তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাপন রীতিমতো চোখ ধাঁধাবে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ভুবনেশ্বরে অর্চনার ৩ কোটি টাকার প্রাসাদোপম বাংলো রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছেন ফার্ম হাউস। বিলাসবহুল বাড়ির পাশাপাশি অর্চনার গাড়ির প্রতিও শখ রয়েছে। তাঁর আস্ত একটি গাড়ির শোরুম রয়েছে বলে দাবি। যেখানে রয়েছে বহুমূল্য কয়েকটি গাড়ি, এসইউভিও। অর্চনাকে গ্রেফতারের পর ওড়িশায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। তাঁর মোবাইল ফোন ও বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া হার্ড ডিস্ক পরীক্ষা করে এক বিধায়কের সঙ্গে অর্চনার ছবি ও হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন পায় পুলিশ।
পুলিশের দাবি, ওই বিধায়কের সঙ্গে বাইরে ঘুরতেও গিয়েছিলেন অর্চনা। নয়াগড়ের একটি সরকারি অতিথিনিবাসে ওই বিধায়কের সঙ্গে অর্চনা এবং আরও দুই মহিলা চার দিন কাটিয়েছিলেন। ওই বিধায়ক নাকি অর্চনাকে একটি দামি গাড়িও উপহার দেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, গত চার বছরে এই কারবার করে অর্চনা ও তাঁর স্বামী মোট ৩০ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি, দামী গাড়ি ও একটি ঘোড়া। অর্চনা নিজেকে আইনজীবী হিসাবে পরিচয় দিতেন বলেও তদন্তে নেমে তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। সুত্র: আনন্দবাজার।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: