রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তরা নিধন করলো কৃষকের ৮ বিঘা জমির সবজি বাগান

প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২২, ০২:৫০ পিএম

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের চর জামিরতায় রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা কেটে ফেলেছে কৃষকের সবজি বাগান। রবিবার (৩০ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পোরজনা ইউনিয়নের চর জামিরতা মাঠে একই গ্রামের এন্তাজ আলী মোল্লার পুত্র কৃষক মোহাম্মদ আলী বিগত কয়েক বছর ধরে নিজের জমিসহ অন্যের জমি বাৎসরিক লিজ নিয়ে প্রায় ৮বিঘা জমিতে সবজি চাষ করে আসছিলেন। এসব জমিতে বেগুন, শসা, ফুলকপি, করল্লা, সিম, মুলা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি।

হঠাৎ করেই গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বেগুণ ক্ষেত ও শসা ক্ষেতের ভিতরে প্রবেশ করে এলোপাথারি কুপিয়ে ভেঙে দুমড়ে মুচরে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার সকালে সবজি ক্ষেত পরিচর্যা করতে এসে কৃষানী মোমেনা বেগম সবজি ক্ষেতের বেহাল দশা দেখতে পায়। দুর্বৃত্তরা শত্রুতা করে বেগুন ও শসা ক্ষেতের প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে বলে জানান কৃষক মোহাম্মদ আলী ও তার পরিবার।

এদিকে ঘটনার তিন দিন হলেও জমির গাছগুরো মরতে দেখে নিরুপায় অশ্রু বর্ষণ করছে কৃষক পরিবার। তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন শীতের মৌসুমে আগাম সবজির চাস করে নগদ অর্থের মুখ দেখবেন। গতর খাটিয়ে মাটির বুক চিড়ে জন্মানো সবজি বিক্রি করে লাভের অংশ দিয়ে চালাবেন সন্তানদের লেখা-পড়ার খরচ ও ভরণ পোষণ। কিন্তু দূর্বৃত্তদের হিংসার ছুড়িতে কেটে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে একটি পরিবারের স্বপ্ন। এখন চারিদিকে হতাশার কুয়াশাই শুধু চোখে মুখে ঘিরে ধরেছে।

রবিবার কৃষক মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার কোন শত্রু নাই, তবুও কে আমার এত বড় ক্ষতি করলো। আমি প্রতিবছর জমিতে সবজি আবাদ করি। গাছে সবজি হলে প্রতিবেশী সবার বাড়ি বাড়ি পাঠাই। কে আমার এত বড় সর্বনাশ করলো ? আমি কি দোষ করেছি? আমাদের সার, বিষ, জৈবসার সব কিনতে হয়। কতগুলো টাকা খরচ করেছি। একরাতে আমার সব শেষ করে দিল। বাকরুদ্ধ কৃষক মোহাম্মদ আলী ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। এ সময় তাকে শান্তনা দিচ্ছিলেন স্থানীয়রা।

মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী মোমেনা বেগম বলেন, আমার এক প্রতিববন্ধি ছেলেকে নিয়ে সবজি চাষ করি। তার লেখাপড়া ও সংসারের খরচের জন্য আমি এবং আমার স্বামী ৮ বিঘা জমিতে সবজি আবাদ করি। বেগুন, শসা, ফুলকপি, সিম, লাউ, ঝিঙাসহ বিভিন্ন সবজি গাছ ছিল। গেল রাতে কে যেন শত্রুতা করে আমাদের বেগুন ক্ষেত ও শসা ক্ষেত কেঁটে দিয়ে গেছে।

এদিকে রাতের আধারে সবজি ক্ষেতের ক্ষতি সাধনের ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক ববলছেন এলাকাবাসীও। তারা জানান কৃৃষক মোহাম্মদ আলী ও তার পরিববার অভাব অনটন মোচনের জন্য ৮বিঘা জমি লিজ নিয়ে তিনি শাক-সবজি চাষ করেন। জমিতে উৎপন্ন সবজি ববছরে ৭থেকে ৮লাখ টাকায় বিক্রি করে খরচ বাদে ২/৩ লাখ টাকা আয় করছেন।

এদিকে এ ঘটনায় শাহজাদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে পোরজনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবু জানান, জামিরতায় কৃষক মোহাম্মদ আলীর সবজি ক্ষেত নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনা দুঃখজনক। ন্যাক্কারজনক ঘটনা যারাই ঘটিয়ে থাকুক তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: