ডেঙ্গু আতঙ্কে তিতুমীর কলেজ

প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২২, ১০:১৪ পিএম

মোঃ আজাদ হোসেন, সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে: দেশজুড়ে চলছে ডেঙ্গুর তান্ডব। দেখা যায় সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে রাজধানীর বাসিন্দারা ই। ঘনবসতি ও অপরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কারণে রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেশী। ডেঙ্গুর এমন প্রাদুর্ভাব থেকেও রেহাই পায়নি রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরাও।

সরেজমিনে কলেজটির হল গুলো ঘুরে দেখা গেছে হলের চারপাশে অপরিষ্কার পরিবেশ, বৃষ্টি পানি জমে রয়েছে। তবে, সেদিকে তা দৃষ্টি গোচরে নেই প্রশাসনের। ডেঙ্গুর তান্ডবে হলের শিক্ষার্থীরা রয়েছে আতঙ্কে। কেও কেও পারছেনা ঠিকমতো পড়তে। ডেঙ্গুর কবলে পড়ে অসুস্থ হয়েছেও বেশকজন৷

কলেজের সুফিয়া কামাল ছাত্রীনিবাসে গত একমাসে বেশকিছু সাধারণ শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে যাদের বেশিরভাগেরই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। ছাত্রীনিবাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০/১২ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েও উঠেছেন কেও কেও।

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের ২য় ও ৩য় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। পড়াশোনার বাড়তি চাপ আর ডেঙ্গু দুই এ মিলে হলের শিক্ষার্থীদের নাকাল করে তুলছে৷ কেও চাইলেই হল ছেড়ে যেতে পারছেন না।

আক্কাসুর রহমান আঁখি হলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শৌরভ রায় বলেন, "হলের চারপাশে কয়েকদিন পর পরই মশা নিরোধক স্প্রে করা হয়। কিন্তু কিছু কিছু সমস্যার সমাধানের পিছনে চেষ্টা করা হয় না। যদি সমস্যাটাই উৎপাটন করে দেয়া হয়। হলের প্রধান সড়ক ও হলের চারপাশটার পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে আরেকটু নজর দেয়া উচিত। হলের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজে ধারাবাহিকতা থাকলে হয় তো এটা কমে আসতে পারে।"

এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, এই পরীক্ষার সময়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শিক্ষার্থীদের জন্য মারাত্মক ভয়াবহ। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তি শারীরিকভাবে এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে নিজে চলার মত শক্তি থাকে না। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা মিস করার সম্ভাবনা থাকে। যা শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের উপর খারাপ প্রভাব ফেলবে।

আক্কাসুর রহমান আঁখি হলের অনার্স প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী মোঃস্বপন বলেন, আমার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পেছনের প্রধান কারণটা হচ্ছে হলের এই ঘিঞ্জি পরিবেশ। যার কারণে মশার উৎপাদন হয় এবং আমি সহ আরও কয়েকজন ডেঙ্গু তে আক্রান্ত হই। আমি চাই হলে এবং এর আশেপাশে ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। হলের আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা।

স্বপন বলেন, "বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ এবং এর ভয়াবহতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। সেটা একজন পরীক্ষার্থীর জন্য তো আরো ভয়াবহ। কারণ পরীক্ষার মাঝখানে যদি কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় তাহলে তার পুরো পরীক্ষাটাই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাছাড়াও আমাদের দেশের মানুষের অপুষ্টিজনিত বেশকিছু সমস্যা রয়েছে সেই সাথে ডেঙ্গুর জন্য মানুষ শারীরিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পরবে। তাই আমি মনে করি একজন শিক্ষার্থীর জন্য এই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মারাত্মক।"

সিরাজ ছাত্রীনিবাস হলের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোছাঃ সজনী রহমান বলেন, হলের আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা করা হলে ডেঙ্গু আরো কমে যেতো। এবং ময়লা আবর্জনা ফেলাতে আমাদের সতর্কতা রয়েছে। হলে এইবার স্বাভাবিক জ্বর দেখা গেছে ৪-৫ জনের ডেঙ্গু হয়নি কারো। তাই কলেজ প্রশাসন এগিয়ে আসেনি। তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার সময় ডেঙ্গুর প্রভাব শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ভয়াবহ।

প্রসঙ্গত, হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ডেঙ্গু ছড়ানো সঙ্গত কারণেই যোক্তিক। কারণ বিভিন্ন জায়গায় জমানো পানি, আশেপাশের পরিবেশ ইত্যাদি মিলিয়ে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে এবং হলের শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছে। মশা নিধনের জন্য যে স্প্রে মেশিনে ধোঁয়া দেওয়া হয় তাও অনেকদিন পর পর দেয়। দেখা যায় যে হলে মশার উপদ্রব লেগেই থাকে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: