ছাত্রলীগের দলীয় কার্যক্রম চলে প্রশাসনিক ভবনে

প্রকাশিত: ০২ নভেম্বর ২০২২, ১২:৩৬ পিএম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের অঙ্গীকারনামা নেওয়া হলেও তা তোয়াক্কা না করে প্রশাসনিক ভবনের রাজনীতিক কর্মসূচি পালন করছেন শাখা ছাত্রলীগ। এতে খোদ প্রশাসন ছাত্রলীগের সকল কর্মকাণ্ডের বাধা দেওয়ার পরিবর্তে দিয়েছেন অনুমতি। এতে রাজনীতিকে উৎসাহিত করছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।

ভর্তি ফরমের তথ্য অনুসারে অঙ্গীকারনামার প্রথমেই উল্লেখ রয়েছে, ‘আমি এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি রাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে তোলার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি মেনে চলতে সচেষ্ট থাকব’। কিন্তু প্রশাসনই এসব রাজনীতি ক্ষেত্রে মানছে না কোন নিয়ম নীতি। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন রাজনীতির কাছে ধরাশায়ী। আমাদের প্রশাসন হলো ভঙ্গুর প্রশাসন, তারা কোন শিক্ষার্থী বান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

জানা যায়, গত (৩১ অক্টোবর) প্রক্টরের অনুমতিতে প্রশাসনিক ভবনের ৪১১ নাম্বার রুমে শাখা ছাত্রলীগ নতুন কমিটি গঠনের নিমিত্তে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী পদ-প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা নেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দায়িত্বশীলরা।

এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আমাদের প্রশাসন প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাস উত্তাল করে দিচ্ছে। বিগত কয়েকটি ঘটনার নেই কোন সমাধান। প্রশাসনে বিচার তদন্ত কমিটি পর্যন্ত এগিয়ে যায়। আমাদের কে অঙ্গীকারবদ্ধ করে প্রশাসন নিজেই এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে। এতে ভর্তি ফরমের সাথে প্রশাসনিকের কর্মকাণ্ড সাংঘর্ষিক মনে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে ছাত্ররাজনীতির কারণে খালেদ সাইফুল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থী মৃত্যু হয়েছে। প্রশাসন কিভাবে ছাত্ররাজনীতিকে এইভাবে উৎসাহিত করছে। আমরা সাধারণত ভর্তির সময় অঙ্গীনামা করি, যে মাদক ও রাজনীতি সাথে জড়িত থাকবো না, কিন্তু দেখা যাচ্ছে ছাত্র রাজনীতির সকল প্রোগ্রাম প্রশাসনের তত্ত্ববধানে প্রশাসনিক ভবনের হয়ে থাকে। প্রশাসন মূলত ভর্তি সময় নিরুৎসাহিত করলে পরবর্তী সেটা পরোক্ষভাবে ছাত্ররাজনীতিকে উৎসাহিত করছে। যেমন গত ৩১ অক্টোবরের প্রোগ্রামের সময় ক্যাম্পাস থমথমে পরিবেশ ছিল এমনকি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এই নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, গত কর্মসূচির জন্য আমরা প্রশাসনে অনুমতি নিয়েছি। ছাত্ররাজনীতির কর্মকাণ্ড ক্যাম্পাসে করতে পারেন কি না? এমন জবাবে তিনি বলেন। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে কোন নিষিদ্ধ নাই, সেক্ষেত্রে আমরা কার্যক্রম চালাতে পারি। যদিও ডিপার্টমেন্টে ভর্তি সময় ফরমে অঙ্গীকারবদ্ধ। কিন্তু আমরা ডিপার্টমেন্ট বা বিভাগ ভিত্তিক কোন কমিটি দিচ্ছি না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ভারপ্রাপ্ত কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ক্ষমতাসীন দল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবন ব্যবহার করতে পারে না, বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে এমন কোন নিয়ম লেখা নেই। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ব্যবহার করতে পারে কি না? এমন প্রশ্নে বলেন, তারা আমাদের কাছে অনুমতি নিয়েছে। যেহেতু বিভিন্ন সংগঠন ব্যবহার করছে, তাই একটা সংগঠন হিসাবে ব্যবহার করতে পারে।

রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, এই সম্পর্কে আমি মতামত দিতে পারব না। তাছাড়া আমি এসব বিষয়ে অবগত না। এই প্রতিজ্ঞা নামাই কেন আসল সেটাও জানি না।

একই বিষয় নিয়ে মতামত দিতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন সাথে দেখা করতে গিয়ে প্রতিবেদকের সাথে দেখা করেন নি এবং মোবাইলে যোগাযোগ এবং ক্ষুদে বার্তা দিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায় নি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: