ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় শিক্ষককে পেটালো সাবেক দুই ছাত্র

প্রকাশিত: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৪:১৩ পিএম

মানিকগঞ্জে একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই বিদ্যালয়েরই সাবেক দু’ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বুধবার (৯ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জেলার সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ শহীদ স্মৃতি বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্কুল শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে স্কুলের সামনের রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে অভিযুক্তদের বিচার দাবী করেন। এতে স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকসহ সাধারণ জনগণ যোগ দেন এবং অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন। ঘটনাটি নিশ্চিত করেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. বজলুর রহমান।

তিনি বলেন, শিক্ষক মারধর করা হচ্ছে এমন খবর শুনে আমরা ছুটে আসি। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইউনিয়ন ক্লিনিকে নিয়ে যাই। সেখান থেকে উপজেলা হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে। তাঁর মুখের চারটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এমন ঘটনা কে ঘটিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের স্কুলেরই সাবেক দুই ছাত্র আলামিন ও রমজান আলী সজল এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে সাটুরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, সাবেক শিক্ষার্থীদের মারধরে আহত ওই শিক্ষকের নাম তোফাজ্জল হোসেন। তিনি ওই বিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জন হলেন, একই গ্রামের মো. রফিকের ছেলে মো: আল আমিন (২১) ও রহমানের ছেলে রমজান আলী সজল (২১)।

আহত শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন।

আহত শিক্ষক মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি স্কুলের কাছে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলাম। তখন আমার নাম্বারে একটি অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে। ফোন রিসিভ করলে স্কুলে ঢোকার আগে গেটের সামনে দেখা করতে বলে বখাটে আলামিন ও রমজান। পরে শিক্ষার্থীদের পড়ানো শেষ করে ১০টার দিকে গেটের সামনে আসলে তারা আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা স্কুলে খবর দিলে অন্য শিক্ষকেরা আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন।

হরগজ শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বজলুর রহমান বলেন, আলামিন ও রমজান প্রতিদিন বিদ্যালয়ের আসা ও যাওয়ার সময় রাস্তায় স্কুল ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করত। তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রীরা মাঝে মধ্যে বিচার দিত। এরা নেশাগ্রস্ত ও মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আমি আমার স্কুলের শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় ওই দুই বখাটের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই।

এ ঘটনায় হরগজ ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জ্যোতি বলেন, স্কুলের শিক্ষককে মারধর করেছে এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমি এমন বখাটে যুবকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

হরগজ শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. খ. ম নুরুল হক বলেন, শিক্ষক পেটানোর ঘটনাটি ন্যক্কারজনক। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস বলেন, শিক্ষক মারধরের ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: