জাঙ্গালিয়ায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ

প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২২, ০২:১০ পিএম

রিয়াদ হোসেন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) থেকে: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সারওয়ার হোসেন এবং ওই ইউনিয়নের লাভলী আক্তার নামের সাবেক এক মহিলা সদস্যসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় ভূক্তভোগী সাহিদুল আলম খান ওরফে সোলায়মান খান বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও তৎকালীন মহিলা ইউপি সদস্যকে অভিযুক্ত করে গাজীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

শনিবার (১২ নভেম্বর) সকালে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের মামলার বিষয়টি জানিয়েছেন ভূক্তভোগী সাহিদুল আলম খান ওরফে সোলায়মান খান।

মামলার অভিযোগে জানা যায়, ভুক্তভোগীর দাদা ছাদত আলী খান মৃত্যুকালে ১ম স্ত্রীর গর্ভজাত দুই ছেলে কাজম আলী খান ও ফজর আলী খান এবং গোলাপজান নামের এক মেয়ে রেখে যান। এছাড়া ২য় স্ত্রী কদবানু ও তার গর্ভজাত এক ছেলে নজম উদ্দিন খান, দুই মেয়ে আলেকা বেগম ও আনেছা বেগমকে রেখে যান। ২য় স্ত্রীর গর্ভজাত সন্তান নজম উদ্দিন খানের উত্তরাধিকারীগণ ইউনিয়ন পরিষদে উত্তরাধিকার সনদের আবেদন করেন।

সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. ফারুক খানের যাচাই-বাছাই ও স্বাক্ষর ছাড়াই ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের তৎকালীন মহিলা সদস্য লাভলী আক্তারের স্বাক্ষর নিয়ে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর উত্তরাধিকার সনদ প্রদান করেন ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সারওয়ার হোসেন। ওই সনদে ১ম স্ত্রীর গর্ভজাত দুই সন্তান ফজর আলী ও গোলাপজানকে বাদ দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ১ম স্ত্রীর গর্ভজাত ছেলে কাজম আলী খানের উত্তরাধিকার সাহিদুল আলম খান ওরফে সোলায়মান খান বাদী হয়ে চলতি বছরের ৬ অক্টোবর গাজীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা (সি.আর মোকাঃ নং ৪৪৮/২০২২) দায়ের করেন।

ওই মামলার অভিযুক্তরা হলেন জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী সারওয়ার হোসেন, তৎকালীন মহিলা ইউপি সদস্য লাভলী আক্তার, মজিবুর রহমান খান, সুলতান উদ্দিন খান, রুহুল আমিন খান, আকবর আলী মিয়া। এরা সবাই জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। এছাড়াও মামলার আরেক অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন ওরফে সাগর জেলার শ্রীপুর উপজেলার রাখালিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

এ ব্যাপারে ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের তৎকালীন মহিলা ইউপি সদস্য লাভলী আক্তার বলেন, যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে সেহেতু আমার জবাবটা আদালতেই দেওয়া উচিত। তবুও বলছি আগের সনদটি ছিল এনালগ। তারা ডিজিটিাল সনদ করার জন্য ইউনিয়ন অফিসে আসে। আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব তাদের জমির সকল কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে আমাকে বলে স্বাক্ষর করতে। আমি চেয়ারম্যান সাহেবের কথার উপর ভিত্তি করে ওই সনদের স্বাক্ষর করি।

৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. ফারুক খান বলেন, এক পক্ষ আমার কাছে আসে উত্তরাধিকার সনদের জন্য। আমার কাছে সকল বিষয় একটু ঘোলাটে মনে হওয়ায় আমি তাদেরকে ওই সনদ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করি এবং তাদের পরামর্শ দেই, তারা যেন ইউএনও’র সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। এর কিছুদিন পরেই জানতে পারি তারা কিভাবে যেন উত্তরাধিকার সনদের ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। ওই সনদে আমাকে স্বাক্ষর করতে বললে আমি পুণরায় তাতে স্বাক্ষর করতে অসম্মতি প্রকাশ করি। এ বিষয়ে আমার আর কিছুই জানা নেই।

জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সারওয়ার হোসেন বলেন, বাদী পক্ষ আমার এলাকার বাসিন্দা। এখানে যাদের উত্তরাধিকার সনদের দরকার ছিল তারা প্রয়োজনীয় সকল কাগজ নিয়ে আমার কাছে আসে। জমির এসএ, আরএস, সিএস সহ সকল কাগজেই তাদের নাম থাকায় আমি তাদের উত্তরাধিকার সনদটিতে স্বাক্ষর করি। তারপরেও যদি কোথাও ভুল থাকে তাহলে তারা সংশোধনীর জন্য আসতে পারতো কিন্তু তারা তা করেনি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: