ঝিলংজা ইউনিয়ন আ.লীগের কাউন্সিল স্থগিত, ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১২:২৩ এএম

কক্সবাজার সদরের ঝিংলজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শেষে আকস্মিকভাবে কাউন্সিল স্থগিত করে কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে দলের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা সড়ক অবরোধ করেন। শনিবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড় ৭টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা ধরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

জানা গেছে, শনিবার সদর উপজেলার ঝিংলজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৩টার দিকে শুরু হয়ে ৫টায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হয়। মাগরিবের পর দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। কাউন্সিল শুরু হলে কাউন্সিলর তালিকায় ভুয়া ভোটারের অভিযোগ তোলে একপক্ষ। এতে কাউন্সিল স্থগিত ঘোষণা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। এরপর বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন কাউন্সিলরসহ সাধারণ নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাওয়ার হাউস হাজিপাড়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান এবং সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে দূরপাল্লার বাসসহ শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

এ সময় ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কাইছারুল হক জুয়েলের অনুরোধ এবং নানা আশ্বাসে সড়ক থেকে সরে যান নেতাকর্মীরা। এসময় তিনি জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান কাউন্সিলের ব্যালট ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন।

ঝিলংজা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরওয়ার আলম বলেন, ‘সম্মেলন ও কাউন্সিল নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সবশেষ বর্ধিত সভায় সবার সম্মতিক্রমে কাউন্সিলর তালিকা অনুমোদিত হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে এক প্রার্থী তালিকা নিয়ে অভিযোগ তোলেন। এতে অন্যান্য প্রার্থী, নেতাকর্মী ও কাউন্সিলররা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।’

তিনি আরোও বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। সম্মেলন এবং কাউন্সিল ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ-উদ্দীপনা বিরাজ করার পাশাপাশি ইইনিয়নের মানুষের মধ্যেও উৎসবের আমেজ দেখতে পায়েছিলাম। প্রথম অধিবেশ শেষে হঠাৎ জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যালটগুলো পকেটে করে নিয়ে চলে যায়।’

এই বিষয়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দীন বলেন, ‘মিজানুর রহমান হেলাল নামের এক প্রার্থীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাউন্সিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। অভিযোগটি সুরাহা করে পুনরায় কাউন্সিল আয়োজনের কথা জানিয়েছেন জেলা নেতৃবৃন্দ।’

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক স্থানীয় চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, ‘এটি মুলত জামায়াত শিবিরের ঘাটি। দীর্ঘদিন পরিশ্রম করে আ.লীগকে সু-সংগঠিত করেছি বলে নৌকা প্রতীকে ২বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। অনেক বছর পর ইউনিয়ন আ.লীগের সম্মেলন এবং কাউন্সিলের ঘোষণা পাওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছিলো। সকাল থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী এসেছিলো সমাবেশস্থলে। প্রথম অধিবেশ শেষে হঠাৎ জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যালট নিয়ে চলে যায়।’

তিনি আরোও বলেন, ‘তার সমন্ধিকে নেতা বানাতে এমন জঘন্য আচরণ করেছেন মুজিব। তার কারণে কক্সবাজারে আ.লীগের সাংগঠনিক অবস্থা বেশ নাজুক হয়ে পড়েছে।’ তিনি এই ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রিয় নেতাদের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন,‘বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: