এক মাসেই তৃতীয় বারের মতো আবারও গণির জালে পোপা মাছ

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২২, ০৪:২৭ পিএম

বঙ্গোপসাগরের পোপার সাথে যেন সেন্টমার্টিনের জেলে গণির বন্ধুত্ব হয়েছে। বারে বারে তার জালেই ধরা দিচ্ছে সাগরের বড় পোপা মাছগুলো। গত পাঁচ বছরে ৫টি বড় পোপা মাছ তার জালে উঠে এসেছে। এসব মাছ বিক্রি করেই লাখপতি হয়েছেন সেন্টমার্টিনের জেলে গণি। চলতি মাসেই তিনটি বড় পোপা মাছ তার জালে দিয়েছেন ভাগ্য দেবতা।

শনিবার সকালে আবদুল গণির মালিকানাধীন ‘এফবি মায়ের দোয়া’ নামে ট্রলারে ২৩ কেজি ওজনের একটি পোপা মাছ ধরা পড়ে। সেন্টমার্টিনের এক সওদাগর মাছটি ৮৫ হাজার টাকায় কিনে নেন। জেলে গণি বলেন, মাছটি স্ত্রী প্রজাতির হওয়ায় তিনি আশানুরূপ দাম পাননি।

গনি বলেন, প্রতিদিনের মতো ট্রলার নিয়ে ভোরে মাছ শিকারে যান তার দলবল। সকাল ৮ টার দিকে জাল টানতে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সাথে বিশাল একটি মাছ দেখে সবাই খুশিতে আত্মহারা। ট্রলার তীরে পৌঁছে অন্যান্য মাছটির সাথে এই মাছটিও বাজারে তুলেন গনি। দাম হাঁকান ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তবে মাছটি মেয়ে প্রজাতির জানতে পেরে আর কেউ আগ্রহী না হওয়ায এক ব্যবসায়ীকে মাছটি ৮৫ হাজার টাকায় দিয়ে দেয়া হয়। এরপরও শুকরিয়া প্রকাশ করেন তিনি।

গনি আরো বলেন, মাছ বিক্রি করে দুটো মাছ ধরার ট্রলার, ৪০টি জাল ক্রয়ের মাধ্যমে বিনিয়োগ করি। সেই সাথে বাড়িটিও করা হয়। এক ছেলে এক মেয়েসহ তার পরিবারে ২০ জনের মতো সদস্য সংখ্যা রয়েছে বলে জানান তিনি।

টেকনাফ উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয় লোকজনের কাছে মাছটি ‘কালা পোপা’ নামে পরিচিত। এ মাছের মূল আকর্ষণ পেটের ভেতরে থাকা পটকা বা বায়ুথলি (এয়ার ব্লাডার)। এই বায়ুথলি দিয়ে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা হয়।সার্জিক্যাল সুতা তৈরি করা যায় বলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই মাছের চাহিদা আছে। এ জন্য পোপা মাছের চড়া দাম।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, শনিবার ভোরে দ্বীপের বাসিন্দা আবদুল গণির নেতৃত্বে কয়েক জেলে বঙ্গোপসাগরের মাছ শিকারে যান। সকালে দ্বীপের পশ্চিম পাড়াস্থল সাগরে জাল তুলে একটি বড় পোপা মাছ পান। মাছটি নিয়ে দ্বীপের জেটি ঘাটে ফিরে আসার পর উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। ধরা পড়া ২৩ কেজি ওজনের পোপা মাছটির দাম হাঁকান সাড়ে তিন লাখ টাকা। পরে মাছটি ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেদেন জেলে গণি।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৮ নভেম্বর সকালে জেলে আবদুল গণিদের জালে ৬০ কেজি ওজনের দুইটি পোয়া মাছ ধরা পড়ে। মাছ দুটি ৮ লাখ টাকা দিয়ে কক্সবাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী ইসহাককে বিক্রি করা হয়। এর আগে গনির জালে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর ৩৪ কেজি ওজনের একটি পোয়া মাছ ধরা পড়েছিল। সেটি বিক্রি করেন ১০ লাখ টাকায়। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে গনির জালে ধরা পড়া পোয়া মাছ বিক্রি হয় ৬ লাখ টাকায়। শনিবার আবারো তার জালে ধরা পড়ে ২৩ কেজি ওজনের পোপা মাছ যা ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: