দিরাইয়ে আ.লীগের সম্মেলনে হামলার ঘটনায় ৪ আসামি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২২, ১১:৩৫ পিএম

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হামলার ঘটনায় এজহারনামীয় ৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে দিরাই থানা পুলিশ। শনিবার দিন ভর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। দিরাই থানার এস আই তপন চন্দ্র দাস আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তারা হলেন, বিদ্রোহী গ্রুপের বহিস্কৃত সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার মামাত ভাই উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের আবদুল আলেকের ছেলে রহমত আলী, তাড়ল গ্রামের নুরে আলম চৌধুরী, চানপুর গ্রামের মৃত গৌরাঙ্গ দাসের ছেলে সন্ঞ্জু দাস ও ঘাগটিয়া গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে রায়হান মিয়া।

গত ১৪ নভেম্বর দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় ঘটনার তিনপর গত বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকালে দিরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদ কলিম উদ্দিন বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ মিয়াসহ ৮১ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক সাইয়েদ মাহবুব হোসেনের আদালতে দায়ের করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর মর্মে আদেশ দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার এজাহারে জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর সোমবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, ৩ সাংসদসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের উপর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ মিয়া তার অনুসারীদের নিয়ে সম্মেলনের মঞ্চে সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নুরল ইসলাম নাহিদ, সুনামগঞ্জের ৩ সাংসদসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এসময় তাদের হামলায় ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হন।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৪ নভেম্বর) উপজেলা বিএডিসি মাঠে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের জন্য সকাল ১০টা থেকে দিরাই বিএডিসি মাঠে জড়ো হতে থাকেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় গ্রুপের নেতাকর্মীরা। দুপুর ১টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে পৌঁছানোর পরপর সম্মেলন শুরু হলে উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা সাবেক পৌর মেয়র ও সভাপতি প্রার্থী মোশারফ মিয়ার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মঞ্চের সামনে আসে।

এসময় মঞ্চে উঠতে গেলে মোশারফ মিয়াকে বাধা দিলেই মোশাররফ মিয়া, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মনোহ চৌধুরীর সমর্থিত, সহযোগী বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে দিরাই আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি সুহেল আহমদের সমর্থকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেনের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। দুই গ্রুপ বেপরোয়া ইট-পাথর ছুঁড়তে থাকলে সমাবেশস্থল রণক্ষেত্রে রুপ নেয়।

এক পর্যায়ে তারা বসার চেয়ার ডাল হিসাবে হাতে নিয়ে নিজেদের রক্ষা করেন। মঞ্চে বসা কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলা আ,লীগের সভাপতি সহ সবাইকে ইটপাটকেল থেকে রক্ষা করতে চেয়ার দিয়ে ইটপাটকেল ফেরাতে এগিয়ে আসে নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশ এসে তাদের মঞ্চে থেকে নামিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে ফের বিকেলে সম্মেলন শুরু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল ইসলাম নাহিদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজুল সামাদ আজাদ ডন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, সহ-সভাপতি নোমন বখত পলিন, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্ত, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খানম-সহ কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অনন্ত ৪০জন আহত হন। আহতরা হলেন, জেলা আ,লীগের সহ সভাপতি খায়রুল কবির রুমেন,দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কামরুল হাসান চৌধুরী, জেলা যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান সেন্টু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের সভাপতি কুবাদ আলী, পৌর কাউন্সিলর এবিএম মাসুম প্রদীপ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ দিরাই উপজেলার সভাপতি রিজওয়ান ইসলাম, দিরাই যুবলীগ নেতা আলী আসগর, টুনু মিয়া, জুসেফ মিয়া প্রমুখ।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: