আগুনে পুড়লো ২৩ পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই, রক্ষা পায়নি ১৯ দোকানও

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২২, ০৯:৩৫ এএম

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১৯ টি দোকান ও ২৩ টি বসতঘর ভস্মীভূত হয়ে সম্পূর্ণ ছাই হয়ে গেছে। শনিবার (১৯ নভেম্বর) ভোর রাত তিনটার দিকে উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের অমজাখালী আল-আমিন মার্কেটে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।

এতে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মালিক ও ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ ও বিভিন্ন ব্যক্তির পক্ষ থেকে জরুরী ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দিনগত রাত আড়াই টার দিকে স্থানীয় করিম এবং রুবেলের মালিকানাধীন একটি কুলিং কর্ণার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয়রা আগুন নেভাতে এগিয়ে এলেও মুহুর্তেই চারদিকে আগুনের লেলিহান শিখা, গ্যাস সিলিন্ডার ও ডিজেলের ব্যারেল বিস্ফোরণের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বাতাসের গতিবেগবৃদ্ধি থাকায় আগুন দোকান থেকে আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে ২৩টি বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

বসতবাড়ি থেকে কোনো রকম বৃদ্ধ ও শিশুদের বের করে নেয়া গেলেও কোনো প্রকার জিনিসপত্র বের করা সম্ভব হয়নি। অধিকাংশ পরিবারের গবাদিপশু অগ্নিদগ্ধ হয়েছে।

পরে দীর্ঘ ২-৩ ঘন্টা পর স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। তবে এর আগে আগুনের নিষ্ঠুরতাশ নিঃস্ব হয়ে যান ১৯টি দোকানের ব্যবসায়ী ও ২৩টি বসতবাড়ির মালিক। দীর্ঘদিনের অর্জনকৃত সম্বলটুকু হারিয়ে ব্যবসায়িরা এখন পাগল প্রায়। অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসার হিসাবের খাতাটিও বের করতে পারে নি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্থ জামাল সওদাগর নামে এক ব্যবসায়ী জানান, তার মালিকানাধীন ২টি দোকানে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল ছিল। অগ্নিকাণ্ডে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আগুনে নিঃস্ব হওয়া কাশমত উল্লাহ কাজল বলেন, পাশের দোকান থেকে আগুন ছড়িয়ে তার বসত বাড়িতে আসে। বাতাসের গতি ও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। কোনো রকম অক্ষত অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বের হতে পারলেও বসতঘরের কোন জিনিসপত্র রক্ষা পায়নি।

কুতুবদিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।

এদিকে, খবর পেয়ে শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) আশেক উল্লাহ রফিক অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও পরিবারে আর্থিক সহায়তা দেন।

এ সময় ইউএনও দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা, কুতুবদিয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর, সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. আবু তাহের, বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ' লীগের সভাপতি আবুল কালাম ও সম্পাদক মিজানুর রহমান টিটু, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাইমুল হুদা বাদশা, উত্তর ধূরুং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেজাম উদ্দিন ও সম্পাদক শওকত ওসমান, স্থানীয় ইউপি (মহিলা) সদস্য হাসিনা আক্তার বিউটি, উপজেলা মৎস্যজীবি ফেডারেশনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও পরিবারকে আর্থিক সহায়তা, গৃহ নির্মাণের যাবতীয় সামগ্রী ও আপদকালীন ভরণ পোষণের ব্যবস্থার গ্রহণের জন্য দলীয় নেতাকর্মী ও কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন এমপি।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: