পাহাড়ের চূড়ায় দৃষ্টিনন্দন দীর্ঘতম সিংহ শয্যা বুদ্ধমূর্তি

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২২, ১১:২০ এএম

পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির দুর্গম জুরাছড়ি মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত একটি উপজেলা। এই উপজেলার পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত সুবলং বৌদ্ধ বিহার। কোনও ধরনের সরকারি সহায়তা ছাড়াই গ্রামবাসী, দায়ক-দায়িকা, উপাসক-উপাসিকাদের দানের অর্থেই বৌদ্ধ বিহারে নির্মিত হয়েছে, দেশের সবচেয়ে বড় বুদ্ধমূর্তি। বুদ্ধমূর্তিটি দেখতে প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটক এবং পূর্ণ্যার্থীরা ভীড় জমাচ্ছেন। এই বুদ্ধমূর্তিটি রাঙ্গামাটি জেলার আরো একটি অন্যতম দৃষ্টিনন্দন স্থান হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসী।

বৌদ্ধ বিহার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এক দশক আগে ২০১২ সালে জুরাছড়ি উপজেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সাধারণ মানুষ ও ভিক্ষুরা দেশের সর্ববৃহৎ ও ১২৬ ফুটের দীর্ঘতম সিংহশয্যা বুদ্ধমূর্তি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। চার বছর পর ২০১৬ সালে ২ ফেব্রুয়ারি বুদ্ধমূর্তিটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সাড়ে ১২ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হয়ে এ বুদ্ধমূর্তিটি। বার্মা থেকে আনা শিল্পীরা এ মূর্তি নির্মাণের কাজ করেন। নির্মিত এই বুদ্ধমূর্তির দৈর্ঘ্য ১২৬ ফুট প্রস্থ ৪০ ফুট, উচ্চতা ৬০ ফুট। সিংহশয্যার মূর্তিটি নির্মাণ করতে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিহার কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এতো বড় ধ্যানরত বুদ্ধমূর্তি দেশে এই প্রথমবারের মতো নির্মিত হয়েছে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়াতেও এর চেয়ে বড় শুয়ে থাকা গৌতম বুদ্ধের মূর্তি আছে কি-না জানা নেই। ২০১৬ সালে এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে কায়িক শ্রমে বুদ্ধমূর্তিটির ঢালাই দেওয়া হয়। সেসময় দূর-দুরান্ত থেকে হাজার হাজার পুণ্যার্থী অংশগ্রহণ করেন।

আরো জানা গেছে, বুদ্ধমূর্তির শরীরের রং সোনালি। থাইল্যান্ড থেকে আনা হয়েছে বুদ্ধমূর্তির চোখ ও রং। দেশের সর্ববৃহৎ বুদ্ধমূর্তিটির স্থপতি বিশ্বজিৎ বড়ুয়া, পওতিপদ দেওয়ান ও দয়াল চন্দ্র চাকমা। এটির প্রধান প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা ও ডিজাইন করেছেন ভদন্ত বিমলানন্দ স্থবির।

দর্শনার্থীরা বলছেন, সরকারীভাবে যদি সুবলং বৌদ্ধ বিহারের উন্নয়ন কাজ করা যায়, তাহলে এটা দেশের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে উঠবে। এতে রাঙ্গামাটি জেলায় পর্যটকের প্রচুর সমাগম হবে।

জুরাছড়ির সুবলং বৌদ্ধ বিহারের সাধারণ সম্পাদক প্রচারক চাকমা জানান, মূর্তিটির অধিকাংশ কাজই সম্পন্ন হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ সিংহ শয্যা বুদ্ধমূর্তি দেখতে প্রতিদিনই মানুষ ছুটে আসছে সুবলং বৌদ্ধ বিহারে।

কিভাবে যাবেন: রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার থেকে লঞ্চ করেই জুরাছড়ি যেতে হয়। সারাদিনে মাত্র দুটো লঞ্চ জুরাছড়ি আসা-যাওয়া করে। সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে ও দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে আরেকটি লঞ্চ জুরাছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ফেরার লঞ্চের সময়-দুপুর দেড়টা ও রাত সাড়ে ৮টা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: