হবিগঞ্জে হাওরাঞ্চলে ২৫ বছরেও সংস্কার হয়নি সড়কটি
হবিগঞ্জের হাওরাঞ্চলের একটি সড়ক ২৫ বছরেও সংস্কার হয়নি! গ্রামবাসী নিজেই স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করলেন। আশাহত এলাকার প্রায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ২৫ বছরেও দুর্ভোগ লাগব হয়নি। জন প্রতিনিধিদের ওয়াদা রক্ষা হয়নি। তাই গ্রামবাসী যুব সমাজ মিলে নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটির আংশিক সংস্কার করেছেন। আউশকান্দি বাজার, আমকোনা বেতাপুর ঈদগাহ থেকে ফরিদপুর ভায়া গোরারাই বাজার সড়কটি এখন আলোচনার শিরোনাম। ঐ সড়কটিতে ভেড়েছে দুভোর্গ। জন চলাচলের অনুপযোগী সড়কটি। তিন দলের ৪জন সাংসদ পরপর শুধু আস্বাস দিলে এটা ছিলো শুভংকরে ফাঁকি। আশাবানী শুধু নীরভে নিভৃতে কাদছে।
জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনের ভোট আদায়ের কৌশল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে নবীগঞ্জ উপজেলার একটি সড়কটি। বিগত ২৫ বছরেও সংস্কার হয়নি। সড়কটি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে ২০ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে। পাকা অংশটুকু ভেঙ্গে মেটোপথে পরিণত হয়েছে।
নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের আউশকান্দি বাজার থেকে আমুকোনা বেতাপুর ঈদগাহ হয়ে দেবপাড়া ইউপির ফরিদপুর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গোরারাই বাজার ঐ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন নবীগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ২০ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ও ছাত্রছাত্রী যাতায়াত করেন। প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ঐ সড়কটির সংস্কার ইস্যূ ভোট আদায়ের প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাড়ায়। ৯৬ সালে জাতীয় নির্বাচনে সড়কটি সংস্কার করবেন বলে আস্বাস দেন সাবেক মন্ত্রী মরহুম আলহাজ্ব দেওয়ান ফরিদ গাজী। সেই আস্বাসে এলাকার মানুষ সড়কটি সংস্কারের জন্য এককাট্রা হয়ে তাকে ভোট দেন।
পরে তিনি ক্ষমতায় গিয়ে মাত্র ১কিঃমিঃ অংশ পাকা করেন। এর পর ২০০১ ও ২০০৮ সালে আবারো ভোট আদায়ের জন্য সড়কটি পুনাঙ্গ সংস্কারের জন্য তিনি আস্বাস দেন। এলাকার মানুষ তাকে পরপর তিনবার ভোট দিয়ে সাংসদ বানালে সড়কটি আর সংস্কার হয়নি। সংসদ সদস্য ফরিদ গাজী মারা যাওয়ার পর ২০১২ সালে উপ-নির্বাচনে এই সড়কটিকে কৌশল হিসাবে ব্যবহার করেন বিএনপি নেতা শেখ সুজাত মিয়া। তিনি জন সাধারণকে আশ্বাস দিয়ে সড়কটি সংস্কার করবেন বলে ভোট আদায় করে বিজয়ী হয়ে পড়ে আর সড়কটি সংস্কার করেননি।
পরে ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পাটির র্প্রার্থী এম, এ মুনিম চৌধুরী বাবু এসড়কটি সংস্কারের আশ্বাস দেন। এলাকাবাসী তাকে সার্পোট করেন। তিনি ঐ এলাকায় ভোটারে মন জয় করেন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি কেউ সড়কটি করেননি তিনি করবেন। পরবর্তী পাঁচ বছরে তিনিও সড়কটি সংস্কার করেননি। ফলে হতাশ হন এলাকাবাসী।
গত ২০১৮ সালের ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনীত সাংসদ প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ফরিদ গাজীর তনয় গাজী শাহনওয়াজ মিলাদ তার বাবার নির্বাচনী ওয়াদা পুরনের আস্বাস দিয়ে সড়কটি সংস্কারের কথা বলেন। মানুষ তাকে ভোটে নির্বাচিত করার পর ৯ মাসের মাথায় দেবপাড়া ইউপির উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে আবারো বলা সড়কটির সংস্কার ও মেরামতের কাজ একমাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। সেই কথায় লোকজন জাতীয় ও স্থানীয় দুটি নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার হয়নি ফলে এলাকাবাসী হতাশ।
এ ব্যাপারে দক্ষিন দৌলতপুর গ্রামের ফারুক আহমদ বলেন আমাদের এই সড়কটি ভোট আদায়ের হাতিয়ার হিসাবে নির্বাচনে প্রার্থীরা সবাই ব্যবহার করেন, নির্বাচন চলে গেলে আর মনে থাকে না। সড়কটি দিয়ে কোন অসুস্থ্য রোগি নিয়ে অথবা ডেলিভারী রোগিদের জন্য ঝুকিপূর্ন। আমরা আশাহত হয়ে নিজেরাই সড়কটি মেরামত করেছি।
সিএনজি চালক হেলাল মিয়া বলেন, আমরা ঐ সড়কটি গাড়ি চালানো বাদ দিতে হবে কারন এটা এখন আর চলাচলের উপযুক্ত নয়। “এটা এখন আর সড়ক মনে হয় না”। প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে হাজারও মানুষ চলাচল করলেও কোন কর্তার নজরে আসছে না।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মুকিত বলেন, এই সড়কটি সংস্কারের জন্য চেষ্টা চলছে কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদী। তিনি বলেন, আমরা তীব্র হতাশা ভোগছি। আমাদের এমপি বলেন অচিরেই টেন্ডার হয়ে যাবে কিন্তু কাজ এখনও হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে আউশকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান দিলওয়ার হোসেন বলেন, সড়কটি চলতি বছরের মধ্যে হবে বলে আশা কম। কারন নতুন টেন্ডার তালিকায় সড়কটি নাম নেই। এমপি সাহেব যদি বিশেষ ক্ষমতা বলে করে দেন সেটা আলাদা বিষয়।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য গাজী মোঃ শাহনওয়াজ মিলাদ বলেন, সড়কটি আমার নির্বাচনী ওয়াদা সেটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে। ইতি মধ্যে ডিও লেটার প্রদান করা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে টেন্ডার হয়ে যাবে। এব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি অফিসার সাব্বির আহমদ বলেন সড়কটি বিশেষ প্রকল্পে দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি চলতি বছরের মধ্যে হয়ে যাবে। সড়কটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন তাই এমপি বিশেষ প্রকল্পে সড়কটি অগ্রাধিকার ভিত্তি করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: